ফাইল চিত্র।
করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে আরও সাত দিন, অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকাশ্য জনসভা, পদযাত্রা, বাইক-সাইকেল মিছিলের মতো খোলা স্থানে প্রচারের উপরে নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। তবে প্রথম দফা ভোটের প্রচারের কথা মাথায় রেখে চার দেওয়ালে ঘেরা সভাগৃহ সর্বাধিক তিনশো ব্যক্তির উপস্থিতিতে বা সভাগৃহের অর্ধেক আসনে লোক বসিয়ে রাজনৈতিক প্রচারসভা করা যাবে। নয়তো এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের নির্দেশ মেনে বদ্ধ এলাকায় সভা করা যাবে। আগামী ২২ জানুয়ারি দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ফের বৈঠকে বসবে কমিশন। সে সময়ে দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রকাশ্য জনসভায় অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নির্বাচন কমিশন গত শনিবার উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে। সে সময়েই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানিয়েছিলেন, দেশে করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় পাঁচ ভোটমুখী রাজ্যে কোনও জনসভা, প্রচারসভা বা বাইক বা সাইকলে মিছিল করা যাবে না। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রথম দফায় সাত দিনের জন্য জারি হয়েছিল। সেই সময়সীমার মেয়াদ শেষ হয় আজ। সে সময়েই চন্দ্র জানিয়েছিলেন ১৫ জানুয়ারি পরিস্থিতি কেমন থাকে, তা বিচার করে কমিশন ভবিষ্যতে প্রকাশ্য জনসভা কিংবা মিছিল করার
অনুমতি দেবে।
সেই মতো আজ বেলা ১১টা নাগাদ ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিক, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ ও নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা বৈঠকে বসেন। সূত্রের মতে, বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন অংশে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ভোটমুখী রাজ্যগুলির পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। এই সময়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে খোলা স্থানে সভা করার অনুমতি দিলে কেবল ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যেই নয়, গোটা দেশে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, অসমে ভোট করিয়েছিল কমিশন। ওই নির্বাচনের পরে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছিল কমিশনের দিকে। সেই অভিজ্ঞতার কারণেও কমিশন আজ স্বাস্থ্যকর্তাদের সুপারিশ মেনে নেয়। বিবৃতিতে কমিশন জানিয়েছে, ভিড় এড়াতে প্রকাশ্য জনসভা ছাড়াও, বাইক-সাইকেল মিছিল, নুক্কড় নাটক সবই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব রাজনৈতিক দলকে কোভিড বিধি মেনে চলার জন্যও অনুরোধ করেছে কমিশন।
করোনা রুখতে কমিশন দফায় দফায় নির্দেশ দিলেও, অভিযোগ উঠেছে, গত কালই সমাজবাদী পার্টিতে অন্য দলের নেতাদের যোগদানের সভায় এত ভিড় হয়েছিল যে, কোনও রকম কোভিড বিধি মানা হয়নি। এই ঘটনায় কোভিড বিধি ভাঙার অভিযোগও দায়ের করেছে লখনউ প্রশাসন। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যত ক্ষণ না কমিশনের তরফে কোভিড-বিধি ভাঙার অভিযোগে কোনও দল বা প্রার্থীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে, এমন নিয়ম ভাঙা চলতেই থাকবে। যার ফলে আগামী দিনে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সংক্রমণ লাগামছাড়া হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।