সত্যপাল মালিক
কিছু দিন আগেই জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল পদ থেকে সরানো হয়েছে তাঁকে। গত ৩ নভেম্বর থেকে গোয়ার রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। গত কাল পানজিমের কাছে একটি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সত্যপাল মালিক। সেখানে রাজ্যপাল হিসেবে নিজের প্রথম বক্তৃতায় অযোধ্যা মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন তিনি। বললেন, রামায়ণে রামকে যখন বনবাসে পাঠানো হয়, উঁচু জাতের কেউ তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। বরং আদিবাসী, দলিত এবং নিচু জাতের মানুষেরাই রাম-সীতা এবং লক্ষ্মণের জন্য সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
পানজিম থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে পোন্ডা শহর। কাল দক্ষিণ গোয়ার এই শহরেই আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের একটি সম্মেলনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। সেখানেই রাম মন্দিরের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। বলেন, ‘‘অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি নিয়ে এখন সারা দেশে আলোচনা চলছে। রোজই বড় বড় সাধু-সন্তদের নানা কথা কানে আসছে আমার। শুধু রামলালার বড় মূর্তি আর রাম দরবারের কথাই তাঁদের মুখে শুনছি। কিন্তু কেওট আর শবরীর মূর্তি নিয়ে কেউ কোনও কথাই বলছেন না। সীতাকে যখন রাবণ হরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন, রামের ভাই তখন অযোধ্যার সিংহাসনে। অথচ সেখান থেকে কোনও সেনা বা রাজা রামকে সাহায্য করতে আসেননি। রাম যখন লঙ্কায় গেলেন, আদিবাসী আর নিচু জাতের লোকেরাই তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেন। কেউ কি এমন কোনও উঁচু জাতের লোকের নাম নিতে পারবেন, যিনি যুদ্ধে রামকে সাহায্য করেছিলেন?’’ এর পরেই কেওট এবং শবরীর প্রসঙ্গ তোলেন সত্যপাল। বলেন, রাম-সীতা-লক্ষ্মণকে বনবাসের সময়ে গঙ্গা নদী পার করিয়ে দিয়েছিলেন মাঝি কেওট। শবরী ছিলেন নিম্ন বর্ণের এক বৃদ্ধা, যিনি রামের পুজো করতেন। সত্যপালের দাবি, রাম মন্দির তৈরির জন্য যে ট্রাস্ট তৈরি হবে, সেখানে তিনি চিঠি লিখবেন। মন্দিরের দরবার হলে যাতে রামের মূর্তির পাশে শবরী আর কেওটের মূর্তিও থাকে, সেই আবেদন জানাবেন। রামমন্দির নিয়ে হঠাৎ করে সত্যপালের এমন মন্তব্যে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা খানিকটা বিস্মিত। অনেকেই মনে করছেন, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপালের পদ থেকে তাঁকে সরানোর
পরেই এতটা বিস্ফোরক কথা বলতে শুরু করেছেন তিনি।