ফাইল চিত্র।
কোন তারিখ থেকে কোন তারিখ পর্যন্ত জেলে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী? কী অভিযোগে তাঁকে বন্দি করা হয়? কোন জেলে তিনি বন্দি ছিলেন?
তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় করা এই প্রশ্নগুলি এবং তার উত্তর, গত ২৬ মার্চ ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য তাঁর কারাবাসের দাবিকে ফের সামনে নিয়ে এল। যে প্রশ্নের জবাব অবশ্য মিলল না প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকেও। মোদীর কারাবাসের তথ্যই শুধু নয়, তারা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিল, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার আগে তাঁর সম্পর্কে কোনও সরকারি তথ্যই দফতরের কাছে নেই। যা রয়েছে সবই ২০১৪-র পরের।
বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলর রাজেশ চিরিমারের এই সংক্রান্ত প্রশ্ন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আন্ডার সেক্রিটারি প্রবীণ কুমারের স্বাক্ষর ও সিলমোহর দেওয়া জবাবটি তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার পরেই তা নজর কাড়ে। পরে তাঁর কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে চিরিমার বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনার পরেই আমার কৌতূহল হয়, তাঁর অপরাধটা কী ছিল? তাঁর বিরুদ্ধে কে অভিযোগ করে, তৎকালীন পাকিস্তান সরকার না ভারত? উত্তর অবশ্য পাওয়া গেল না।”
পশ্চিমবঙ্গে ভোট শুরু হওয়ার আগের দিন অর্থাৎ, ২৬ মার্চ ঢাকার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাশে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর একাত্তরের বিখ্যাত বক্তৃতার লাইন উদ্ধৃত করেছিলেন মোদী। জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য তিনিও যৌবনে কারাবরণ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সত্যাগ্রহও করেন।
এই তথ্যের সত্যাসত্য নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে। সরকারি ভাবে অবশ্য কখনই কিছু জানানো হয়নি। রাজনৈতিক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় জনসংঘের সভাপতি এবং লোকসভার সাংসদ হিসাবে অটলবিহারী বাজপেয়ী সেই সময়ে বেশ কিছু আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ভারত সরকার যাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধকে সমর্থন করে, সে জন্য জনসংঘ একটি প্রতীকী সত্যাগ্রহ করেছিল একাত্তরের অগস্টে। অনেকে বলেছিলেন, সেই আন্দোলনে মোদী যোগ দিয়ে থাকতেও পারেন। কিন্তু কারাবরণের যুক্তি মেলেনি। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর কোনও ব্যাপারেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে কোনও নথি যে নেই, এই প্রশ্নের উত্তরে তা আজ সামনে চলে এল।