রাজকোটের গেমিং জ়োনে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
রাজকোটের গেমিং জ়োনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩২। এর মধ্যে রয়েছে ৯টি শিশু। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে আরও অনেকে। কী ভাবে ওই গেমিং জ়োনে আগুন লাগল, তার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই গেমিং জ়োন থেকে বাইরে যাওয়ার একটিই মাত্র দরজা ছিল। শুধু তা-ই নয়, সেখানকার কোনও ‘ফায়ার লাইসেন্স’ ছিল না।
সপ্তাহান্তে রাজকোটের এই গেমিং জ়োনে ভিড় হত। অন্য সপ্তাহের মতো শনিবারও সেখানে তিলধারণের জায়গা ছিল না। শনি-রবি এই গেমিং জ়োনে ঢুকতে গেলে গ্রাহকদের খরচ করতে হয় মাত্র ৯৯ টাকা। আর সেই কারণেই প্রতি শনি, রবিবার এখানে ভিড়ও হয়। তবে গতকাল সন্ধ্যায় আচমকাই সেখানে আগুন লেগে যায়। আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে গোটা গেমিং জ়োনে। প্রাণ বাঁচাতে গেমিং জ়োন ছাড়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় গ্রাহকদের মধ্যে। একটি মাত্র দরজা থাকায় বিপদ আরও বাড়ে বলেই মনে করছে দমকলবাহিনী।
দমকলের এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘আগুনের কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। গেমিং জ়োনের অস্থায়ী কাঠামোগুলি ভেঙে পড়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। একই সঙ্গে হাওয়া বইতে থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে।’’ প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শর্ট সার্কিটের কারণেই আগুন লাগে। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কয়েক কিলোমিটার থেকে কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল।
সূত্রের খবর, ওই গেমিং জ়োন চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ছিল না কর্তৃপক্ষের কাছে। এমনকি, পুরসভা থেকে ফায়ার ক্লিয়ারেন্সের এনওসি-ও ছিল না তাঁদের কাছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ওই গেম জ়োনের মালিক যুবরাজ সিংহ সোলাঙ্কি, ম্যানেজার নিতিন জৈন-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শীর্ষ আইপিএস আধিকারিক সুবাষ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করেছে। রাজকোটের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) বিনায়ক পটেল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের দেহগুলি এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে যে, শনাক্ত করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
রাজকোটের মেয়র নয়না পেধাদিয়া এনওসি না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে এত বড় একটা গেমিং জ়োন এনওসি ছাড়া চলছিল, তা আমরা তদন্ত করে দেখব।’’ তবে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি না করার আহ্বান জানিয়েছেন। রবিবার ভোরেই ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল। সেখান থেকে তিনি আহতদের সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালেও যান। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভিও।