Caste

Caste Census: জাত গণনায় সায় দেবেন না: কেন্দ্র

মহারাষ্ট্র সরকার পঞ্চায়েতে ওবিসি সংরক্ষণের লক্ষ্য নিয়ে পিছিয়ে পড়া শ্রেণিদের জন্য গঠিত রাজ্য কমিশনের অধীনে রাজ্য জুড়ে জাতগণনার কাজে নামতে চায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্র সরকার যে জনগণনায় ওবিসি বা পিছিয়ে পড়া অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত মানুষের গণনাকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে, তাতে তাদের মত নেই বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সামাজিক ন্যায় এবং ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের তরফে হলফনামা দিয়ে বলা হয়েছে, প্রথমত এই কাজ প্রশাসনিক ভাবে করে ওঠা ‘কঠিন’ এবং দ্বিতীয়ত করলেও তা তথ্যগত ভাবে ‘অসম্পূর্ণ’ এবং ‘ত্রুটিপূর্ণ’ থেকে যাবে।

Advertisement

কেন্দ্র তার হলফনামায় উল্লেখ করেছে, ২০২০-র ৭ জানুয়ারি তারা যে বিজ্ঞপ্তি দেয়, সেখানে ২০২১-এর জনগণনায় কেবল তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের বিষয়েই তথ্য সংগ্রহের কথা বলা হয়েছিল। ওবিসি-দের বাদ রাখাটা ছিল সরকারের ‘সচেতন নীতিগত সিদ্ধান্ত’। সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাই কেন্দ্রের অনুরোধ, তারা যেন ২০২১-এর জনগণনায় গ্রামীণ ভারতের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি ও জাতের আর্থ-সামাজিক তথ্যসারণি অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ না দেয়। হলফনামায় বলা হয়েছে, নচেৎ তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনের ৮ নম্বর ধারায় বিধৃত নীতিগত সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করা হবে।

এ দিকে মহারাষ্ট্র সরকার পঞ্চায়েতে ওবিসি সংরক্ষণের লক্ষ্য নিয়ে পিছিয়ে পড়া শ্রেণিদের জন্য গঠিত রাজ্য কমিশনের অধীনে রাজ্য জুড়ে জাতগণনার কাজে নামতে চায়। মহারাষ্ট্র বিধানসভা এ বছরই প্রস্তাব পাশ করেছে যে, রাজ্যে ওবিসি জনসংখ্যার তথ্য জানতে তারা কেন্দ্রের কাছে ২০১১ জনগণনায় ওবিসি-সংখ্যার তথ্য চাইবে। ২০১১ জনগণনার ওবিসি-তথ্য কেন্দ্র এখনও অবধি প্রকাশ করেনি। তাই মহারাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, ২০১১-র তথ্যও ‘ত্রুটিপূর্ণ’ এবং ‘ব্যবহার-অযোগ্য’। জাতগণনা নিয়ে তার অনীহার কথা কেন্দ্র বারবারই আগে বলেছে। এ নিয়ে সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে তরজাও হয়েছে তার। আজ কেন্দ্র নিজের সেই বক্তব্যকেই হলফনামার আকারে আদালতে জমা দিল।

Advertisement

বিরোধীদের প্রশ্ন, উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের মুখে বিজেপি ওবিসি ভোট ধরে রাখার চেষ্টায় খামতি রাখছে না। কিন্তু ওবিসি গণনার কথা বললেই বেঁকে বসছে। বস্তুত বিজেপি নেতারা মনেই করেন, ২০১৭-য় উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ও ২০১৯-এর লোকসভায় ওবিসি ভোটাররা বিজেপিকেই ভোট দিয়েছেন। বিশেষত যাদব ছাড়া অন্য ওবিসিদের ভোট পেয়েই বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। ২০১৯-এ খোদ প্রধানমন্ত্রী প্রচারে গিয়ে বলেছেন, তিনি সবচেয়ে অনগ্রসর শ্রেণির পরিবারের সন্তান। সম্প্রতি ডাক্তারি পড়ায় ওবিসিদের ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে এবং রাজ্যগুলির ওবিসি তালিকা তৈরির ক্ষমতা নিশ্চিত করে মোদী সরকার বিজেপির জন্য ওবিসি ভোট নিশ্চিত করে ফেলতে চেয়েছে। কিন্তু এসপি, আরজেডি, কংগ্রেস জাত গণনার দাবি তুলে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে চেষ্টা করছে। জেডিইউ, আপনা দল, নিষাদ পার্টি, রিপাবলিকান পার্টির মতো শরিক দলও এই দাবিতে যোগ দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার আগে ১৯৩১-এ শেষ বার জাত গণনা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে মণ্ডল কমিশন বলেছিল, জনসংখ্যায় ওবিসিদের হার আনুমানিক ৫২ শতাংশ। এখন জাত গণনায় যদি দেখা যায়, ওবিসিদের জনসংখ্যা সত্যিই ৫০ শতাংশের বেশি, তা হলে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারেই সংরক্ষণ দেওয়ার দাবি উঠবে।’’ আবার এসসি-এসটি-ওবিসিদের জন্য চাকরি-শিক্ষায় ৫০ শতাংশের বেশি আসন সংরক্ষণ করতে গেলে ‘জেনারেল ক্যাটেগরি’ বা উচ্চবর্ণের ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে। সুতরাং রাজনৈতিক অঙ্কেই জাত গণনার দাবি কেন্দ্র এড়াতে চাইছে বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র অবশ্য দাবি করেছে, জাত গণনার কাজটি খুবই ঝক্কির এবং সেখানে পদে পদে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা। সুতরাং তারা ও পথে হাঁটতে চায় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement