নীতীশকে কতটা বুঝতে পেরেছে বিজেপি!
যে কোনও মুহূর্তে বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করতে পারেন নীতীশ কুমার, এমন জল্পনার পারদ যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন নীতীশের মনোভাব বুঝতে তাঁকে ফোন করেছিনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নীতীশের এনডিএ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার দু’দিন আগের এই ফোন কথোপকথনে নীতীশ নাকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘চিন্তার কিছু নেই’। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এমনই দাবি করেছেন নীতীশের প্রাক্তন ডেপুটি সুশীলকুমার মোদী। নীতীশের বিরুদ্ধে কথার খেলাপ করার অভিযোগ তুলে সুশীল দাবি করেছেন, বিগত দেড় বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত উদ্যোগে নীতীশের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কোনওবারেই নীতীশ তাঁকে কোনও অভিযোগ করেননি।
সঙ্ঘের লোক হলেও, সুশীল কট্টর বিজেপি নন কোনওদিনই। মধ্যপন্থী এই বিজেপি নেতার সঙ্গে তাই রাজনৈতিক সখ্য গড়ে উঠতে সময় লাগেনি লোহিয়াপন্থী নীতীশের। ২০২০ সালের আগে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে বিহারে যত বার এনডিএ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তত বার নীতীশের ডেপুটি পদে ছিলেন সুশীল মোদী। ২০২০-তে নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল রেখে এনডিএ সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও উপমুখ্যমন্ত্রী পদে সুশীলকে আর ফেরায়নি বিজেপি। তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য করে দেওয়া হয়। নীতীশের আস্থাভাজন সুশীলের অনুপস্থিতিতেই বিজেপি আর নীতীশের মধ্যে সম্পর্কের সুতোটা ছিঁড়ে গেল কি না, তা নিয়ে যখন জোর জল্পনা চলছে, তখনই নীতীশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনলেন বিহারের মোদী।
সুশীলের আর একটি মন্তব্যও বিহারের রাজনৈতিক রঙ্গে নতুন উপাদান যোগ করেছে। তিনি জানিয়েছেন, নীতীশের দল জেডি (ইউ)-র একাংশ চেয়েছিলেন নীতীশ কুমারকে উপরাষ্ট্রপতি করা হোক। দলের এই অংশটি নাকি সুশীলকে নীতীশের স্থলাভিষিক্ত হওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। নীতীশের দল স্বভাবতই সুশীলের এই সব দাবিকে নস্যাৎ করেছে। জেডি (ইউ)-র তরফে জানানো হয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার কোনও আকাঙ্ক্ষা নীতীশের ছিল না। নীতীশ বুধবার শপথগ্রহণের পর জানিয়েছেন, তিনি জাতীয় রাজনীতির মুখ হয়ে ওঠার কোনও লড়াইয়ে নেই। কিন্তু নীতীশ সত্যিই কথা দিয়েও কথার খেলাপ করেছেন কি না, তার উত্তর জেডি (ইউ) কিংবা নীতীশ কারও তরফেই এখনও মেলেনি।