বিহারের মুখ্য়মন্ত্রী নীতীশ কুমার (বাঁ দিকে), বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
ছপরায় বিষমদ খেয়ে ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিজেপির আক্রমণের মুখে পড়েছে বিহারে নীতীশ কুমারের সরকার। এ বার কৌশলে নীতীশকে খোঁচা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিহারের বেগুসরাইয়ের সাংসদ গিরিরাজ সিংহ। নীতীশের মদ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘বিহারে মদ হল ঈশ্বরের মতো, সর্বত্র বিরাজমান কিন্তু চোখে দেখতে পাবেন না!’’ নীতীশের মদ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তেরও পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন গিরিরাজ।
বুধবার, সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন গিরিরাজ। নীতীশকে এ বিষয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকার আবেদন করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘যদি দেখা যায়, নীতিটি সফল হল না, তা হলে তা নিয়ে নতুন করে ভাবা প্রয়োজন।’’ যদিও সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা বলতে কি তিনি বিহারে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বলছেন, তা স্পষ্ট করেননি। তার পরেই গিরিরাজের সংযোজন, ‘‘প্রতি দিন বিহারে বিষমদ খেয়ে কেউ না কেউ মারা যাচ্ছেন। কিন্তু নীতীশ তাঁর সিদ্ধান্তেই অনড়। বুঝতেও পারছেন না যে তিনি ব্যর্থ। বিহারে মদ হল ঈশ্বরের মতো, সব জায়গায় আছে কিন্তু চোখে দেখতে পাবেন না!’’ বিহার বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের নীতীশের ধমক নিয়েও অসন্তুষ্ট গিরিরাজ। নীতীশকে রুচিহীন আখ্যা দেন তিনি। প্রসঙ্গত, ছপরা-কাণ্ড নিয়ে বিধানসভায় বিরোধীরা বার বার স্লোগান তোলে। এক সময় মেজাজ হারান নীতীশ। উত্তেজিত স্বরে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তো কী হয়েছে? তোমরা মাতাল হয়ে গিয়েছ।’’
শুধু গিরিরাজই নয়, পাটলিপুত্রের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামকৃপাল যাদবের মুখেও গিরিরাজেরই কথার প্রতিধ্বনি। তিনি বলেন, ‘‘যদি নীতীশ কুমার ঠিকমতো নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করতে না পারেন, তা হলে তাঁর কুর্সি ছেড়ে দেওয়াই উচিত।’’
সম্প্রতি বিহারের ছপরা জেলায় বিষমদ পান করে ১৭ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আরও অনেকে। শুধু ছপরাই নয়, বিহারে মাঝেমাঝেই বিষমদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা শোনা যায়। এই প্রেক্ষিতেই বিজেপির গিরিরাজের প্রশ্ন, বিহারে মদ নিষিদ্ধ করার নীতীশের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত যখন নীতীশ নিয়েছিলেন, তখন তিনি বিজেপির জোটসঙ্গী। এবং এই সিদ্ধান্তের পিছনে বিজেপির সহায়তা পেয়েছিলেন। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নীতীশ বিজেপির হাত ছেড়ে লালুপুত্র তেজস্বীর হাত ধরেছেন। ফলে বিজেপি এখন বিরোধী বেঞ্চে।