কার্তিকেয় এবং নীতীশ। ফাইল চিত্র।
অপহরণের মামলায় দানাপুর আদালতে আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সে সময় আরজেডির বিধান পরিষদ সদস্য কার্তিকেয় সিংহ হাজির ছিলেন পটনার রাজভবনে! নীতীশ কুমার মন্ত্রিসভার আইনমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার জন্য!
গত ১৬ অগস্টের ওই ঘটনার পরেই আরজেডির ওই নেতাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবিতে সরব হয়েছিল বিহারের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা থেকে না সরালেও কার্তিকেয়র দফতর বদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বুধবার আইন দফতর থেকে তাঁকে পাঠানো হয়েছে কম গুরুত্বপূর্ণ ইক্ষু (আখ) বিষয়ক দফতরে।
কার্তিকেয়র স্থানে বিহারের নয়া আইনমন্ত্রী হিসাবে বুধবার আরজেডির শামিম আহমেদের নাম ঘোষিত হয়েছে। গত দু’সপ্তাহ নীতীশ মন্ত্রিসভায় আখ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন পূর্ব চম্পারণ জেলার নরকটিয়া কেন্দ্রের বিধায়ক শামিম। তিনি উত্তর বিহারে আরজেডির ‘সংখ্যালঘু মুখ’ হিসাবে পরিচিত।
বস্তুত, ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া কার্তিকেয়কে রাজ্যের আইনমন্ত্রী করায় মহাগঠবন্ধন মন্ত্রিসভার যাত্রার সূচনাতেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকে। চাপের মুখে সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘‘এমন কোনও মামলার কথা আমার জানা ছিল না।’’
এই পরিস্থিতিতে কার্তিকেয়কে সরানো হতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছিল দু’সপ্তাহ আগেই। যদিও বিহারের মহাগঠবন্ধনের বৃহত্তম দল আরজেডি-র প্রধান লালুপ্রসাদ সে সময় কার্তিকেয়র পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘উনি কোনও অপরাধ করেননি। সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা।’’
শুধু কার্তিকেয় নন, বিহারের আর এক আরজেডি মন্ত্রী সুধাকর সিংহের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে সরকারি চাল খোলাবাজারে বিক্রি করার পুরনো একটি মামলা ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আরজেডির রাজ্য সভাপতি তথা প্রভাবশালী রাজপুত নেতা জগদানন্দ সিংহের ছেলে সুধাকর বর্তমানে বিহারের কৃষিমন্ত্রী পদে রয়েছেন। একাধিক চালকলের মালিক সুধাকরের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে হওয়া চাল চুরির মামলা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
ঘটনাচক্রে সে সময়ে আরজেডির ওই রাজপুত নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের প্রশাসন। স্বভাবতই বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে— যার বিরুদ্ধে এক সময়ে নীতীশের পুলিশ চাল চুরির মামলা করেছে, তাঁকেই এখন কী ভাবে কৃষিমন্ত্রী করেন নীতীশ? অবশ্য সুধাকর নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘‘আমার চালের কলে পাঠানো সরকারি চালের হিসাবে কোনও গরমিল হয়ে থাকলে তা পূরণ করার প্রস্তাব আমি আগেই দিয়েছি সরকারকে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এ নিয়ে জলঘোলা করছে বিজেপি।