—ফাইল চিত্র।
নামেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আসল ক্ষমতা বিজেপির হাতেই। সময় এলেই ওঁকে ছুড়ে ফেলে দেবে। বুধবার এমন ‘ভবিষ্যৎবাণী’ করল শিবসেনা। নীতীশই বা কত দিন বিজেপির ‘অনুগ্রহ’-এর বোঝা বইতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা।
বিহারে বিজেপি-নীতীশের সমঝোতা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছে শিবসেনা।। কম আসন পেয়েও বিজেপি-র অনুগ্রহ নেওয়া উচিত হবে না বলে বিরোধীদের সুরে তারাও সুর মিলিয়েছিল। তবে সে সবের তোয়াক্কা না করেই নীতীশ সোমবার সপ্তম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
এই নিয়েই বুধবার দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’য় নীতীশের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে শিবসেনা। ‘সামনা’য় প্রকাশিত একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারকে একটু বেশিই ভালবাসেন। আসনসংখ্যা বেশি ছিল বলে মহারাষ্ট্রে শিবসেনাকে মুখ্যমন্ত্রীর আসন ছেড়ে দিতে আপত্তি ছিল বিজেপি-র। কিন্তু বিহার নির্বাচনে যে দল তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে, তাদের হাতেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের শিরোপা তুলে দিয়েছে তারা। কী মহানুভবতা! রাজনীতিতে এমন পরিত্যাগ সত্যিই বিরল। কিন্তু প্রশ্ন হল, নীতীশ কুমার কতদিন এই অনুগ্রেহর বোঝা বইতে পারবেন’।
আরও পড়ুন: অন্য দলে যান বা নতুন দল গড়ুন, সিব্বলকে হুঁশিয়ারি অধীরের
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মেনে বেশি আসন পাওয়া সত্ত্বেও বিহারে নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়েছে বিজেপি। তবে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে দলের দুই বিধায়ককে তুলে এনেছে তারা— তারকিশোর প্রসাদ এবং রেণুদেবী। নীতীশকে চাপে রাখতেই তাঁর ঘাড়ের উপর বিজেপি নিজেদের দুই বিধায়ককে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাপিয়ে দিয়েছে বলেও দাবি করেছে শিবসেনা। তাদের মতে, ‘নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রীর করার প্রতিশ্রুতি পালন করেছে বিজেপি। কিন্তু এটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। নামেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। তাঁকে নাকাল করে পদত্যাগ দিতে বাধ্য করা এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। পরিকল্পনা করেই তাই দু’-দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’।
আরও পড়ুন: সাধ্যের চেয়ে বেশি আসনে লড়েই বিহারে কংগ্রেসের এই পরিণতি: চিদম্বরম
বিহারে দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী নিয়ে বিজেপির তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও ‘সাফাই’ দেওয়া হয়নি। তবে নীতীশ এ নিয়ে আগাম সতর্ক হতে শুরু করে দিয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাঁদের মতে, ক্ষমতায় এলে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তেজস্বী যাদব। তার পাল্টা ১৯ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি। এ ব্যাপারে গোড়া থেকেই নিশ্চুপ নীতীশ। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেও কর্মসংস্থানের দায়িত্ব সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। যে কারণে বাণিজ্য, শিল্পের মতো বিভাগ দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর হাতে ছেড়ে দিয়েছেন নীতীশ, যাতে পরবর্তী কালে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি ‘মিথ্যা’ প্রতিপন্ন হলেও, তাঁকে দোষারোপ করতে না পারে বিজেপি।