ছবি পিটিআই
ভারত-বিরোধী অবস্থান আরও চড়া করছে নেপাল। ভারতের তিনটি এলাকাকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার পরে নেপাল সরকার এ বার বিহার সীমান্তে বাঁধ সংস্কারে বাধা দিচ্ছে। এই বাঁধ সংস্কার না-হলে উত্তর বিহারে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
নেপালের এই একরোখা মনোভাবের কথা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে জানিয়েছে বিহার সরকার। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আজ জলসম্পদ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে বাঁধ মেরামতে নেপালের বাধাদানের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
গোলমালের সূত্রপাত গত মে মাস থেকে। নেপাল ও ভারতের সীমান্তের মাঝখানে ‘নো ম্যান্স ল্যান্ড’-এ লালবাকেয়া নদী। এই নদীর উপরে গন্ডক বাঁধ। তার ৩৬টি গেটের মধ্যে ১৮টি নেপালে এবং ১৮টি ভারতে অবস্থিত। ভারতের দিকে থাকা গেটগুলি আগেই মেরামত হয়েছে। সীমান্তের ও-পারে থাকা গেটগুলি মেরামত করতে দিতে নারাজ নেপাল সরকার। তাদের যুক্তি, সীমান্ত নির্দিষ্ট করার জন্য নদীর উপরে থাকা দু’টি কনক্রিটের খুঁটি পাওয়া যাচ্ছে না। ওই খুঁটি না পাওয়া পর্যন্ত মেরামতের কাজ করতে দেওয়া হবে না।
বিহারের জলসম্পদমন্ত্রী সঞ্জয় ঝা বলেন, ‘‘নো ম্যানস ল্যান্ডে গন্ডক বাঁধ মেরামতে নেপাল সরকার অনুমতি দিচ্ছে না। কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের এলাকায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, মেরামতের সরঞ্জামও নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। আগে কখনও এমন হয়নি। কোনও সমস্যা হলে আলোচনা করে তা মিটিয়ে নেওয়া হত। কিন্তু এ বার নেপাল কোনও আলোচনায় বসতে চাইছে না।’’ মন্ত্রীর অভিযোগ, শুধু বাঁধ মেরামত নয়, বন্যা রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপেও বাধা দিচ্ছে নেপাল। ২০১৭ সালে নেপালে প্রবল বৃষ্টির ফলে লালবাকেয়া নদীতে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেটি এখনও পুরোপুরি মেরামত এখনও হয়নি। মন্ত্রীর আশঙ্কা, নেপালের দিকে বাঁধের অংশ মেরামত না-হলে বন্যায় ভাসবে বিহারের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে বিদেশমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন সঞ্জয়।
বিষয়টি নিয়ে আজ বিদেশ মন্ত্রক আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানায়নি। সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, নেপালের সঙ্গে বর্তমান সম্পর্ক নিঃসন্দেহেই মাথাব্যথার কারণ। কিন্তু এখন চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলছে। সেই সমস্যা কিছুটা মিটলে, তার পরে কাঠমান্ডুর সঙ্গে আলোচনা শুরু করবে নয়াদিল্লি।