ফাইল ছবি
আগামিকাল নীতি আয়োগের পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। রাত পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে ওই বৈঠকে আসছেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধিতার কারণে চন্দ্রশেখর ওই বৈঠক এড়িয়ে গেলেও এই নিয়ে কেন্দ্রের পরপর চারটি আমন্ত্রণ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী এড়িয়ে যাওয়ায় দুই শিবিরের দূরত্ব বৃদ্ধির জল্পনা বাড়ল।
বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার কারণ হিসাবে সোমবার পটনায় নীতীশের জনতা দরবার রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেডিইউ নেতৃত্ব। তা ছাড়া সদ্য করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন নীতীশ। শারীরিক দুর্বলতাও তাঁর না আসার অন্যতম কারণ বলে দাবি করেছে দল। যদিও রাজনীতির অনেকের মতে, ২০২০ সালে বিহারে জেডিইউ ও বিজেপি সরকার গঠনের পর থেকে দু’পক্ষে মতপার্থক্য বাড়ছে। বিরোধী নেতা লালু প্রসাদের দলের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতার পরে জোট আদৌও থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। নীতীশের উপরে চাপ বাড়াতে সম্প্রতি পটনায় দলের সাতটি শাখা সংগঠনের দু’দিনের সভা করেন বিজেপি নেতৃত্ব। যাতে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ, জেপি নড্ডার মতো শীর্ষ নেতারা। শরিক হয়ে বিহারে সংগঠন বিস্তারে বিজেপির ওই প্রচেষ্টাকে নীতীশ যে ভাল ভাবে নিচ্ছেন না, তা নিয়ে ঘরোয়া ভাবে ক্ষোভ উগরে দেন জেডিইউ নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে বিজেপির উপরে নীতীশ যে ক্ষুব্ধ, সেই বার্তা দিতেই সম্ভবত কালকের বৈঠক তিনি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছেন।
অন্য দিকে আগামী বছর তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচন। ওই রাজ্যে রাওয়ের দল টিআরএসকে বিরোধী দল হিসাবে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে বিজেপি। জনভিত্তি বাড়াতে সম্প্রতি ওই রাজ্যে নিজেদের কর্মসমিতির বৈঠক করে বিজেপি। যাতে উপস্থিত ছিলেন মোদী-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যে রাও বিজেপি বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটলেও দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি বৈঠক করলে ভুল বার্তা যেতে পারে, সেই আশঙ্কায় এ যাত্রায় বৈঠকে যাচ্ছেন না রাও। যদিও যোগ না দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, রাজ্যের নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় প্রকল্পে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে না পারা এবং কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া নীতি, রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে তিনি কালকের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকছেন। রাওয়ের চিঠির প্রেক্ষিতে নীতি আয়োগ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে তেলঙ্গানাকে কী পরিমাণে অর্থ সাহায্য করেছে, তার ফিরিস্তি দিয়ে জানিয়েছে, কেন্দ্রের লক্ষ্যই হল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে শক্তিশালী রাজ্য গঠন করা। পরিচালন পর্ষদের বৈঠক হল দেশের সর্ব্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটি মঞ্চ। যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্য দেশকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক যোজনা নিয়ে পারস্পরিক আলোচনা করে থাকে। সেই বৈঠকে তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি দুর্ভাগ্যজনক।