নিতিন গডকড়ী। ফাইল চিত্র।
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ট্রেনে-স্টেশনে চা, কফি বা দুধের মতো পানীয় পরিবেশনে মাটির ভাঁড়ের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। এ বার রেল স্টেশনে মাটির ভাঁড়ের ব্যবহার চালু করতে চাইছেন কেন্দ্রের ভারী এবং মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী।
সারা দেশের ১০০টি স্টেশনে মাটির ভাঁড় চালু করার জন্য রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন গডকড়ী। পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু বিমানবন্দর এবং বিভিন্ন রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাস টার্মিনালেও মাটির ভাঁড়ের ব্যবহার চালু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে সব ব্যস্ত স্টেশনে মাটির ভাঁড়ের ব্যবহার দীর্ঘ মেয়াদে চালিয়ে যাওয়া কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রেলকর্তাদের একাংশ। লালু তাঁর আমলে বিষয়টি নীতিগত ভাবে বাধ্যতামূলক করলেও পরের দিকে চাহিদার সঙ্গে তাল রেখে সারা বছর ভাঁড়ের জোগানে সমস্যা দেখা দেয়। তা ছাড়া যাত্রীদের একাংশ ব্যবহৃত মাটির ভাঁড় রেললাইনে ফেলায় বিভিন্ন স্টেশনে নিকাশি নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়। অনেক জায়গায় রেললাইনের পাথরের সঙ্গে পোড়া মাটির ভাঁড়ের টুকরো মিশে গিয়ে লাইনের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে বলেও অভিযোগ ওঠে। কেটারিং সংস্থাগুলি অভিযোগ করে, মাটির ভাঁড় ব্যবহারে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এই সব কারণে রেলে ধীরে ধীরে মাটির ভাঁড়ের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।
রেল সূত্রের খবর, সারা দেশে এখন শুধু বারাণসী ও রায়বরেলী স্টেশনে টেরাকোটার কাজ করা মাটির ভাঁড় এবং প্লেট ব্যবহার করা হয়। খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশনের চেয়ারম্যান ওই দু’টি স্টেশনে ভাঁড়ের ব্যবহার চালু করার জন্য রেলমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন। সেই অনুরোধ মেনে গত জানুয়ারিতে সেখানে টেরাকোটার কাজ করা মাটির ভাঁড় এবং প্লেটের ব্যবহারের নির্দেশ দেন গয়াল।
খাদি ও গ্রামোদ্যোগ দফতরের তরফে মৃৎশিল্পীদের সাহায্য করতে বছরখানেক আগে বৈদ্যুতিক চাকা সরবরাহের বন্দোবস্ত করা হয়। চলতি বছরে ২৫ হাজার মৃৎশিল্পীর কাছে ওই চাকা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ফলে মাটির ভাঁড়ের উৎপাদন আগের তুলনায় অনেকটাই বাড়বে। ওই শিল্পীদের জন্য বাজার তৈরি করতেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রী চিঠি লিখেছেন বলে মনে করছেন রেলকর্তারা। আপাতদৃষ্টিতে মাটির ভাঁড় পরিবেশ-বান্ধব বলে মনে হলেও তার ব্যবহারে সমস্যাও কম নেই বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা।