প্রতীকী ছবি।
আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে রাজ্যগুলির বাজেটের অন্তত আট শতাংশ বরাদ্দ করার সুপারিশ করল নীতি আয়োগ।
দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বুনিয়াদি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধির দাবি করে আসছেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্য, উভয় পক্ষই এ ব্যাপারে গড়িমসি করছে।
চলতি আর্থিক বছরের অন্তর্বর্তী বাজেটে জিডিপির মাত্র ২.২ শতাংশ স্বাস্থ্যে খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এই পরিস্থিতিতে আজ রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করল নীতি আয়োগ। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাহায্যে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
সে রিপোর্ট অবশ্য বিশেষ আশার আলো দেখাতে পারেনি। অতীতের মতো এক নম্বর স্থান পেয়েছে কেরল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থানের মতো গো-বলয়ের রাজ্যগুলি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। খানিক পিছিয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। নীতি আয়োগ সূত্রের বক্তব্য, সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নয়নে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত নেতিবাচক ছবিটি পাল্টানো কঠিন। সেই লক্ষ্য ছুঁতে রাজ্যগুলিকে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পল।
বিনোদের কথায়, ‘‘কেন্দ্র চাইছে, ২০২৫ সালের মধ্যে রাজ্যগুলি তাদের বাজেটের অন্তত আট শতাংশ এই স্বাস্থ্য খাতে খরচ করুক।’’ নীতি আয়োগের কর্তারা আজ অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, রাজ্যগুলির ক্ষমতা সীমিত। তাই পরিকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্রকেও সমান ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এর আগে ২০২৫ সালের মধ্যে জিডিপির ২.৫ শতাংশ অর্থ খরচ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল মোদী সরকার। তা বাড়িয়ে যাতে দ্বিগুণ করার জন্য সুপারিশ করতে চলেছে নীতি আয়োগ।
এ দিকে গত বারের তালিকায় দশ নম্বরে থাকা পশ্চিমবঙ্গ নেমে গিয়েছে আরও এক ধাপ। তবে রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে রাজ্যের থেকে তথ্য না পাওয়া অবনতির একটি কারণ।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সদ্যোজাতের মৃত্যুর ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ চতুর্থ স্থান থেকে সরে গিয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। কেরলে যেখানে প্রতি হাজার জনে ৬টি শিশু মারা যায়, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটি হল ১৭। আর কেরলে যেখানে পাঁচ বছরের নীচে শিশু মৃত্যুর হার হাজারে ১১, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে সেই হার হল ২৭। এ ক্ষেত্রেও গোটা দেশে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
জন্মের সময়ে ওজন কম থাকার নিরিখে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে তালিকায় প্রায় শেষের দিকে। জম্মু-কাশ্মীরে যেখানে ৫.৫ শতাংশ শিশু ওই সমস্যায় ভোগে তখন এ রাজ্যের প্রায়
১৬.৫ শতাংশ শিশু ওই সমস্যার শিকার। নীচে রয়েছে কেবল ওড়িশা। ছেলে ও মেয়ের জন্মহারের ক্ষেত্রেও এক স্থান নেমে গিয়ে চুতর্থ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সেখানে কমেছে মেয়েদের জন্মহার। গত বার যেখানে হাজার জন ছেলে-পিছু ৯৫১ জন মেয়ের জন্ম হয়েছিল, সেখানে চলতি রিপোর্টে ওই সংখ্যাটি হল ৯৩৭।
টিকাকরণের ক্ষেত্রে পাঁচ নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। প্রথম চারটি রাজ্যই যেখানে একশো শতাংশ টিকাকরণের লক্ষ্য ছুঁতে সক্ষম হয়েছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে টিকাকরণের আওতায় এসেছে ৯৫.৮ শতাংশ শিশু।
এ ছাড়া গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসকের উপস্থিতি, কিংবা হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসবের ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গের চিত্রটি বিশেষ আশানুরূপ নয়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।