জোধপুর বিমানঘাঁটি থেকে এ দিন সুখোই-৩০ এমকেআই চড়ে আকাশে উড়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। খতিয়ে দেখেছেন বাহিনীর সামরিক প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।
মিগ-২৯-এর পরে সুখোই-৩০ এমকেআই। ভারতীয় বায়ুসেনার সবচেয়ে শক্তিশালী ফাইটার জেটে আকাশে উড়লেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
যে কোনও মুহূর্তে যুদ্ধের সম্মুখীন হওয়ার জন্য দেশের সশস্ত্র বাহিনী কতটা প্রস্তুত— একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তারই অঙ্গ হিসেবে এ দিন রাজস্থানের জোধপুর এয়ারফোর্স স্টেশন থেকে আকাশে ওড়েন নির্মলা সীতারামন। জানানো হয়েছে বায়ুসেনার তরফ থেকে।
এই মুহূর্তে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে যত রকমের যুদ্ধবিমান রয়েছে, সুখোই-৩০ এমকেআই সেগুলির মধ্যে সেরা। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ডাবল ইঞ্জিন মাল্টিরোল এয়ার সুপিরিয়রিটি ফাইটার জেটগুলির অন্যতম হল এই সুখোই। ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সক্ষমতা অর্জনের পর থেকে সুখোই ভারতের যে কোনও প্রতিপক্ষের জন্য আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। বাহিনীর সমরসজ্জা খতিয়ে দেখতে সেই যুদ্ধবিমানে চড়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর উড়ান বিশেষ অর্থবহ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
গত সপ্তাহেই ভারতীয় নৌসেনার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন সীতারামন। এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার আইএনএস বিক্রমাদিত্যের ডেক থেকে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানে চড়েছিলেন তিনি। এ বার জোধপুর বিমানঘাঁটি থেকে সুখোই-৩০ এমকেআই নিয়ে আকাশে উড়লেন।
আরও পড়ুন: ভূষণের দাবিতে চাপ বাড়ল প্রধান বিচারপতির উপর
দেশের উত্তর এবং পশ্চিম সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ যখন আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি, সে সময় সমরসজ্জা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সফর বাহিনীর মনোবল নিঃসন্দেহে বাড়াবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। কোন অঞ্চলে বাহিনীর অগ্রাধিকার কীসে, সে বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ধারণা আরও স্পষ্ট হবে এবং সেই অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপও হবে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
নির্মলা সীতারামনের এই পরিদর্শন কর্মসূচি অবশ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দীর্ঘসূত্রিতা সংক্রান্ত উদ্বেগ কাটাতে পারছে না। পরিস্থিতি এখন যে রকম, তাতে আগামী কয়েক বছরে ভারতীয় বায়ুসেনায় যুদ্ধবিমানের সংখ্যা কমবে বই বাড়বে না। লোকসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দেওয়া রিপোর্টেই এ কথা স্পষ্ট হচ্ছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আরও ২ স্কোয়াড্রন সুখোই ফাইটারকে বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করার পথে এগোচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কিন্তু মিগ-২১ এবং মিগ-২৭ ফাইটারের বেশ কয়েকটি স্কোয়াড্রনকে বসিয়েও দিতে হবে ধাপে ধাপে। বসিয়ে দিতে হবে জাগুয়ারের ২টি স্কোয়াড্রনও।
আরও পড়ুন: আপৎকালীন ভিত্তিতে ১.৬৬ লক্ষ বন্দুক কেনার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল্লির
ইউপিএ জমানায় বিরোধী আসনে থাকা বিজেপি তথা এনডিএ এই বিষয় নিয়ে খুব শোরগোল তুলেছিল। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার যে গতিতে বাহিনীর জন্য সরঞ্জাম কিনছে, তাতে দেশের নিরাপত্তা সাংঘাতিক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে বিজেপি অভিযোগ করেছিল। ক্ষমতায় এলে অত্যন্ত দ্রুত বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং যুদ্ধবিমান কেনা হবে বলে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক যে গতিতে এগিয়েছে, তাতে ২০১৯ সালের মধ্যে বায়ুসেনায় যুদ্ধবিমানের সংখ্যা বাড়ার কোনও সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না।