বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরোচ্ছেন নির্মলা সীতারামন। শুক্রবার সংসদ চত্বরে। পিটিআই
হিসাব মেলাতে হিমশিম শাসক দলের সাংসদেরা!
আয়করে নতুন বিকল্পের সদ্য সন্ধান দিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। কিন্তু তাতে আদৌও লাভ হবে কি না তা নিয়ে রীতিমতো সংশয়ে আয়করদাতারা। আমজনতার মতোই কার্যত এক পংক্তিতে বিজেপি সাংসদেরাও। নতুন না পুরনো ব্যবস্থা, কর সঞ্চয়ী প্রকল্পে বিনিয়োগ লাভ, না কি বিনিয়োগ না করলে লাভ— বুঝতে পারছেন না তাঁরাও। তাই আজ খাতা-কলম নিয়ে নতুন-পুরনো ব্যবস্থার লাভ ও ক্ষতি বোঝাতে মাঠে নামেন খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলাই। কারণ বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্ব শেষ হতেই দলীয় নির্দেশ মেনে বাজেট-আয়কর ছাড়ের ফায়দা আমজনতার কাছে গিয়ে বোঝাতে হবে বিজেপি নেতাদের।
ভোটমুখী বছর হওয়ায় এ বার আয়করে নতুন বিকল্প এনেছে মোদী সরকার। যাতে বলা হয়েছে, বছরে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে, নতুন বিকল্পে একটি টাকাও কর দিতে হবে না। অন্য দিকে পুরনো পদ্ধতিতে যে সুবিধা মেলে পাঁচ লক্ষ টাকা আয়ে। কেন্দ্রের যা দাবি, নতুন প্রকল্প তখনই আকর্ষণীয় হবে যদি কেউ বিভিন্ন করসঞ্চয়ী প্রকল্প, মেডিক্লেম বা গৃহঋণ না নেন। যা নিয়েই মূলত সংশয় তৈরি হয়েছে। তাই আজ প্রশ্নোত্তর পর্ব মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরেই দেরি না করে বিজেপি সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে বসেন নির্মলা। সূত্রের মতে, প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংসদদের একটি বড় অংশই নতুন ও পুরনো আয়কর ব্যবস্থার পার্থক্য, কোনটিতে লাভ আর কোনটিতে ক্ষতি তা নিয়ে প্রশ্ন করেন নির্মলার কাছে। বৈঠকে উপস্থিত এক সাংসদ বলেন, ‘‘আমজনতার বাজেটে নিয়ে আগ্রহ মূলত দু’টি বিষয়ে। কিসের দাম বাড়ল আর কিসের কমল! দ্বিতীয় হল আয়করে ছাড় পেলাম কি না। এ ক্ষেত্রে সরকার বলছে নতুন ব্যবস্থায় লাভ। কিন্তু লোকে তা বুঝতে পারছে না।’’
সূত্রের মতে, বৈঠকে অধিকাংশ প্রশ্ন আয়কর সংক্রান্ত হওয়ায় আয়করের নতুন বিকল্প নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেন নির্মলা। জবাব দেন বিভিন্ন সাংসদের প্রশ্নেরও। বুঝিয়ে দেন কেন নতুন ব্যবস্থা লাভদায়ক। আজকের আলোচনাটি যে হেতু সামগ্রিক বাজেট ঘিরে, তাই আয়করের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন ওঠে বৈঠকে। কেন্দ্র আমজনতার উন্নতিতে যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে তা বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে আরও কী ভাবে ভাল ভাবে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে জানতে চান অনেকে। যে সব বিরোধী শাসিত রাজ্যে কেন্দ্রীয় প্রকল্প ঘিরে দুর্নীতি হচ্ছে সেগুলি আটকানো বা কেন্দ্রের তাতে ভূমিকা কী হতে পারে, তা নিয়েও জানতে চান অনেক সাংসদ। প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে এক সাংসদ যতটা আয়করের বিষয়টি নিয়ে প্রত্যয়ী, ঠিক ততটাই সংশয়ে আর এক বঙ্গীয় সংসদ। তিনি বলেন, ‘‘স্ত্রী-কে ব্যাখ্যা করতে হবে আয়করের হিসেব-নিকেশ। জানি না বোঝাতে পারব কি না!’’