—ফাইল চিত্র।
জন্ম তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের তামিল পরিবারে। মাঝে মধ্যে হিন্দি বলতে গিয়েও অসুবিধায় পড়েন নির্মলা সীতারামন। তবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী আজ রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার তথা তৃণমূলকে নিশানা করলেন বাংলা ভাষাতেই।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ভোটের প্রচারে বঙ্গে গিয়ে প্রায়ই বাংলা বলছেন। ‘আসল পরিবর্তন’-এর ডাক দিয়ে বিজেপির গা থেকে ‘বহিরাগত’ তকমা ধুয়ে ফেলতেই তাঁকে বাংলায় কথা বলতে হচ্ছে, বাঙালি মনীষীদের স্মরণ করতে হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। আর অর্থমন্ত্রী ইংরেজিতে লেখা কাগজ পড়ে বাংলা বলেছেন তৃণমূলের ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’-র অভিযোগ দিতে। তবে তাঁরও পাখির চোখ থেকেছে বঙ্গের ভোট।
আজ রাজ্যসভায় অর্থ বিল নিয়ে আলোচনায় তৃণমূলের দোলা সেন, অর্পিতা ঘোষ বাংলায় বক্তৃতা করেন। দোলা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন। সঙ্গে ‘লজ্জা, লজ্জা’ বলে কটাক্ষ করেন। জবাবি বক্তৃতার শেষ পর্বে নির্মলা বলেন, ‘‘আমি বাংলাতেই অভিযোগের জবাব দিতে চাই।’’ তার পরে কাগজ দেখে পড়ে পড়ে বলেন, ‘‘গরিব কৃষকদের জন্য কেন্দ্র ১০ হাজার কোটি টাকা দিতে চায়। রাজ্য দিতে দিচ্ছে না। এটা কি ঠিক? লজ্জা, লজ্জা।’’ উচ্চারণে খামতি মেনে নিয়েই অর্থমন্ত্রী ফের বলেন, ‘‘কেন্দ্র বাংলার গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করতে চায়। রাজ্য করতে দিচ্ছে না। এটা কি ঠিক?’’ নির্মলার অভিযোগ, পিএম-কিসানের টাকা পশ্চিমবঙ্গের চাষিরা পায়নি বলেই বাজেটে ওই প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ কম হয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকেই। দোলা পাল্টা প্রতিবাদ করতে উঠলে নির্মলা বাংলাতেই বলেন, ‘‘দোলাজি, বসুন।’’ দোলা অভিযোগ তোলেন, রাজ্য পিএম-কিসানের টাকা চাষিদের দিয়ে দিতে বলেছে। নির্মলা ভুল কথা বলছেন।
তামিল অর্থমন্ত্রীর মুখে বাংলা কথায় বিতর্ক হাসি মুখে শুরু হলেও চাপান-উতোরে উত্তাপ বাড়তে থাকে। নির্মলা বলেন, দোলারা বাংলায় বক্তৃতা করলেও তিনি ধৈর্য ধরে শুনেছেন। তাঁর কথাও তৃণমূলকে শুনতে হবে। তৃণমূলের দিক থেকে অভিযোগ ওঠে, নির্মলা মিথ্যে বলছেন। দোলাকে ক্ষমা চাইতে বলেন নির্মলা। অভিযোগ তোলেন, বাংলার চাষিদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এর পরেই তৃণমূলের বেঞ্চ থেকে প্রবল স্লোগানের চোটে নির্মলা তাঁর বক্তৃতা শেষ করতে পারেননি। তবে অর্থবিল রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যায়।
অর্থবিলের বিতর্কে সব বিরোধীরাই মোদী সরকারের দিকে অর্থনীতির দুরবস্থার জন্য আঙুল তুলেছিলেন। নির্মলা জবাবে ইউপিএ-সরকারের দিকে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন। তাঁর দাবি, বাজেটে রাজকোষ ঘাটতি বেড়ে গেলেও আর্থিক মূল্যায়নকারী সংস্থা বা ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির রেটিং কমে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।