নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চার আসামী। —ফাইল চিত্র
প্রাণভিক্ষার আর্জি তাঁর টেবিলে পৌঁছনোর পরে একটুও দেরি করলেন না রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। জানিয়ে দিলেন, নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় অন্যতম দণ্ডিত মুকেশ সিংহের ‘মার্সি পিটিশন’ খারিজ করছেন তিনি। রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের পরে এ দিনই দিল্লির দায়রা আদালতের অতিরিক্ত বিচারক সতীশ কুমার অরোরা ঘোষণা করেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ছ’টার সময়ে ফাঁসি দেওয়া হবে চার অভিযুক্তকে। নির্ধারিত ২২ জানুয়ারির ১০ দিন পরে।
এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে আর এক অভিযুক্ত পবন গুপ্ত আবেদন জানিয়েছে যে, ঘটনার সময়ে, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে, সে নাবালক ছিল। তাই তার মৃত্যুদণ্ড মকুব করে দেওয়া হোক। এর আগে একই আর্জি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন পবনের আইনজীবী। ১৯ ডিসেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।
এর পরে পবন বা অন্য দুই দণ্ডিত— বিনয় শর্মা এবং অক্ষয়কুমার সিংহের মধ্যে কেউ যদি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায়, তা হলে আরও পিছোবে ফাঁসি। কারণ প্রত্যেক দণ্ডিতকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোর জন্য সময় দিয়েছে আদালত। এবং নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি যদি তাঁদের ক্ষমা না-ও করেন, তা হলেও তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে দণ্ডিতদের ফাঁসির আগে ১৪ দিন সময় দিতে হবে। তবে জেল কর্তৃপক্ষের ধারণা, অন্য দণ্ডিতদের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে, কেন্দ্রীয় বাজেটের দিনই ভোরবেলা ফাঁসি হচ্ছে চার জনের।
গত পরশু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়ে দায়রা আদালতে মুকেশের আইনজীবী আবেদন করেন, ফাঁসির দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। কারণ আইনের দিক থেকে দেখলে, রাষ্ট্রপতি মুকেশকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন। আজ তাই রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের পরেই ফাঁসির দিনক্ষণ ঘোষণা করেন দায়রা আদালতের বিচারক। রায় দেওয়ার সময়ে তিনি বলেন, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে, দণ্ডিতের আইনজীবী ফাঁসি পিছোনোর জন্য নিত্য-নতুন ফিকির বার করছেন। এ ভাবে কত দিন চলবে!’’
এ ভাবে ফাঁসির দিন পিছোনোয় কিছুটা হতাশ নির্ভয়ার মা আশাদেবী। শুক্রবার দিল্লিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘হাল ছাড়লে চলবে না। আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’ রাষ্ট্রপতি মুকেশের আর্জি না-মঞ্জুর করায় ও আদালত ফাঁসির দিন ঘোষণা করার পরে নির্ভয়ার বাবা বদ্রীনাথ বলেন, ‘‘ফাঁসি পিছিয়ে গিয়েছে শুনে খুব মুষড়ে পড়েছিলাম। এখন ফের আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।’’
সংবাদ সংস্থা