২২ জানুয়ারি ফাঁসি হওয়ার কথা দোষীদের। —ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে। অথচ গত সাত বছরে জেলের মধ্যে কোনও কাজই করেনি মুকেশ সিংহ। এই দীর্ঘ সময়ে বার বার নিয়মও ভেঙেছে তারা। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে নির্ভয়া কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মুকেশ সিংহ, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত এবং বিনয় শর্মা সম্পর্কে এমনই তথ্য সামনে এল।
তিহাড় জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দি থাকাকালীন গত সাত বছর জেলের মধ্যে পরিশ্রম করতে হয়েছে নির্ভয়ার ধর্ষকদের। তা থেকে অক্ষয়, পবন এবং বিনয় মিলে মোট এক লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা আয় করেছে। অক্ষয় একা ৬৯ হাজার টাকা রোজগার করেছে। পবন রোজগার করেছে ২৯ হাজার টাকা। ৩৯ হাজার টাকা আয় করেছে বিনয়। একমাত্র মুকেশই কোনও কাজ করতে রাজি হয়নি।
২০১৬ সালে ওই চার জন নতুন করে পড়াশোনাও শুরু করে। মুকেশ, পবন এবং অক্ষয় দশম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পরীক্ষায় বসে। কিন্তু তাদের কেউই পাশ করতে পারেনি। ২০১৫-য় স্নাতকস্তরে ভর্তি হয় বিনয়। কোর্স শেষ করতে পারেনি সে।
আরও পড়ুন: ২২ জানুয়ারি ফাঁসি হচ্ছে না নির্ভয়া কাণ্ডের ৪ দোষীর
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
এই সাত বছরে যথেচ্ছ নিয়ম ভঙ্গও করেছে অপরাধীরা। মোট ১১ বার জেলের নিয়ম ভেঙেছে বিনয়। পবন আট বার নিয়ম ভেঙেছে। মুকেশ নিয়ম ভেঙেছে তিন বার। এক বার নিয়ম ভেঙেছে অক্ষয়। তার জন্য তারা শাস্তিও পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে দু’বার পরিবারেরর লোকজনের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি রয়েছে ওই চার জনের। জেলের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার শাস্তি পাওয়া বিনয়ের সঙ্গে দেখা করতে মঙ্গলবারই তিহাড়ে পৌঁছন তার বাবা। তার দু’দিন আগে মুকেশের সঙ্গে তার মায়ের দেখা হয়। গত ৭ জানুয়ারি পবনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল তার পরিবার। নভেম্বরে অক্ষয়ের সঙ্গে জেলে দেখা করে যান স্ত্রী। কিন্তু গত ৭ জানুয়ারি আদালত মৃত্যু পরোয়ানা জারির করার পর পরিবারের কোনও সদস্য তাকে দেখতে আসেনি।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’, ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে সওয়াল সেনাপ্রধানের
আগামী ২২ জানুয়ারি পৃথিবীর বৃহত্তম কারা জেল চত্বর তিহাড়ের ৩ নম্বর জেলে, ওই চারজনকে একসঙ্গে ফাঁসিতে ঝোলানোর কথা। রবিবার সেখানে ফাঁসির মহড়াও সারা হয়ে গিয়েছে। ভারতে এই প্রথম একসঙ্গে এত জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে। তার জন্য মেরঠ থেকে পবন জল্লাদকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ফাঁসি পিছু ১৫ হাজার টাকা পাবেন তিনি।
সাজা সংশোধনের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও, মুকেশ এবং বিনয়ের আর্জি ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই ঘোষণার পরেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে মুকেশ। তবে এখনও পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্ত জানাননি রাষ্ট্রপতি।