n সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি নির্ভয়ার মা আশাদেবী। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।
নির্ভয়া-ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই দণ্ডিত, বিনয় শর্মা (২৬) ও মুকেশ কুমার (৩২)-এর কিউরেটিভ পিটিশন মঙ্গলবার খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই ঘোষণার পরেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে মুকেশ।
গত ৭ জানুয়ারি দিল্লির দায়রা আদালত রায় দেয়, নির্ভয়া মামলার চার অভিযুক্তের ফাঁসি হবে ২২ জানুয়ারি, সকাল সাতটার সময়ে। বলা হয়, শেষ আইনি পদক্ষেপ হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে ‘কিউরেটিভ পিটিশন’ করতে পারবে তারা। ৯ জানুয়ারি বিনয় ও মুকেশ কিউরেটিভ পিটিশন করলেও অন্য দুই সাজাপ্রাপ্ত, পবন গুপ্ত (২৫) ও অক্ষয়কুমার সিংহ (৩১) এখনও এই আবেদন করেনি।
আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এন ভি রমনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির এক বেঞ্চের সামনে বিনয় ও মুকেশের ওই আবেদনের শুনানি হয়। বেঞ্চ জানায়, এই আর্জির কোনও ভিত্তি নেই। তাই তা খারিজ করে দেওয়া হল। বেঞ্চে বিচারপতি রমন ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি আর ভানুমতী এবং বিচারপতি অশোক ভূষণ। এই দুই অভিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টে ফাঁসি স্থগিত করার আর্জিও জানিয়েছিল। তাদের সেই আবেদনও খারিজ করে দেয় বিচারপতি রমনের বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: সাক্ষরদেরও শিক্ষিত করা দরকার, সিএএ-র বিরুদ্ধে মুখ খোলায় সত্য নাদেল্লাকেও ছাড়ল না বিজেপি
তিহাড় জেল সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালতে তাদের কিউরেটিভ পিটিশন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে মুকেশ। একই সঙ্গে দিল্লি হাইকোর্টে সে আর্জি জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি যে-হেতু তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন, তাই আদালত তার ফাঁসি স্থগিত করার নির্দেশ দিক। কাল বিচারপতি মনমোহনের নেতৃত্বে এক বেঞ্চ সেই আপিল শুনবে। অন্য তিন অভিযুক্ত অবশ্য এখনও রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায়নি।
কিউরেটিভ পিটিশন খারিজ করে দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নির্ভয়ার দাদু লালজি সিংহ বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। সারা গ্রাম খুশি। ২২ জানুয়ারি ওই চার জনের ফাঁসি হয়ে গেলে অকাল দীপাবলি পালন করব।’’
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে এক চলন্ত বাসে ২৩ বছরের নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও ভয়াবহ নির্যাতন করেছিল ছয় অভিযুক্ত। ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মারা যায় মেয়েটি। ছ’জনের মধ্যে এক জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তৎকালীন আইন মোতাবেক তিন বছর জুভেনাইল হোমে রাখার পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। আর এক অভিযুক্ত রাম সিংহ জেলেই আত্মহত্যা করেছিল। আর আট দিন বাদে বাকি চার জনের ফাঁসির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তিহাড় জেলের কর্তৃপক্ষ।