একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিসে তল্লাশি এনআইএ-র। ছবি পিটিআই।
সমাজসেবার নামে বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মের জন্য বিদেশ কিংবা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্থসাহায্য আসছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে শ্রীনগর ও বান্দিপোরার দশটি এলাকায় এবং বেঙ্গালুরুর একটি অঞ্চলে বুধবার তল্লাশি চালিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। নিশানা ছিল মূলত মানবাধিকার কর্মীদের বাড়ি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও কিছু সংবাদ সংস্থা। যেমন, ‘জম্মু-কাশ্মীর কোয়ালিশন অব সিভিল সোসাইটি’ (জেকেসিসিএস)-র দফতর, ইংরেজি দৈনিক ‘গ্রেটার কাশ্মীর’ এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অফিস। আজ এই তল্লাশির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলি।
এ ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন উপত্যকার রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা। পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি বলেন, ‘‘মতামত প্রকাশের অধিকারের উপর ভয়াবহ আঘাত।’’ পিপলস কনফারেন্স-এর প্রেসিডেন্ট সাজ্জাদ লোন বলেন, ‘‘এই তল্লাশিতে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’’ ঘটনার নিন্দা করেছে ‘কাশ্মীর এডিটর্স গিল্ড’-ও। তাদের বক্তব্য, স্থানীয় মিডিয়াকে ক্রমাগত নিশানা করা হচ্ছে।
এনআইএ অবশ্য দাবি করেছে, তারা বেশ কিছু বিতর্কিত নথিপত্র, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করেছে। তারা এ-ও জানিয়েছে, গত ৮ অক্টোবর একটি মামলা দায়ের হয়। তাতে অভিযোগ করা হয়, কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অর্থসাহায্যের নাম করে বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজের জন্য টাকা তুলছে। ওই মামলার ভিত্তিতেই তারা গত কাল তল্লাশি অভিযানে নামে।
সমাজকর্মী খুররম পারভেজের বাড়িতে তল্লাশি করেছে এনআইএ। তিনি জেকেসিসিএস-এর পাশাপাশি ‘এশিয়ান ফেডারেশন এগেনস্ট ইনভলান্টারি ডিসাপিয়ারেন্সের’-র চেয়ারম্যানও। মানবাধিকার কাজকর্মের জন্য বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছেন তিনি। ২০০৪ সালে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে পা হারান পারভেজ। জেকেসিসিএস-এর আর এক কর্তা পারভেজ আহমেদ মাট্টার বাড়িতেও তল্লাশি চলেছে। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব পেরেন্টস অব ডিসাপিয়ার্ড পার্সনস’-এর চেয়ারপার্সন পারভিনা আহানগারের বাড়িতে হানা দেয় এনআইএ। এএফপি-র সাংবাদিক পারভেজ বুখারির বাড়িতেও তল্লাশি চলেছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আথরাউট’-এর দফতরের হানা দিয়েছিল এনআইএ। সংস্থাটি শ্রীনগরে ডায়ালিসিস সেন্টার চালায়। স্বল্পমূল্য ওষুধ, অ্যাম্বুল্যান্স-সহ একাধিক চিকিৎসা পরিষেবা দেয়।