অসম সাহিত্য সভার পরবর্তী কেন্দ্রীয় অধিবেশন হবে ডিমা হাসাও জেলার হাফলঙে। আগামী বছরের ৩-৪ ফেব্রুয়ারি অধিবেশনের দিন চূড়ান্ত হয়েছে।
ডিমা হাসাও জেলায় অসমিয়াদের সংখ্যা একেবারে হাতে গোনা। যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই চাকরি সূত্রে বসবাস করছেন। ডিমাসারাই প্রধান ভাষাগোষ্ঠী। রয়েছেন অন্যান্য উপজাতি মানুষও। সবার সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ়তর করতেই এই জেলাকে অধিবেশনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অসম সাহিত্য সভার প্রধান সম্পাদক পরমানন্দ রাজবংশী। তিনি জানান, ‘‘পাহাড়ি জেলাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের আরেকটি কারণ। ডিমা হাসাও প্রকৃতির রম্যভূমি। এক সময় জঙ্গি উপদ্রবের জন্য সবাই এই জেলা এড়িয়ে চলতেন। বিভিন্ন সংগঠন বন্দুক ছেড়ে দেওয়ার পর এখন শান্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু সে কথা বাইরের মানুষের কাছে তেমনভাবে পৌঁছয়নি।’’ হাফলঙের অধিবেশনকে তাঁদের ‘মিশন’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এই অঞ্চলটি যে এখন শান্তির স্বর্গভূমি, সেই বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে পর্যটকরা ফের আকৃষ্ট হবেন।’’ হাফলং-সহ ডিমা হাসাও রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলেই তাঁদের বিশ্বাস।
২০১৭ সালে অসম সাহিত্য সভার শতবার্ষিকী অধিবেশন। সেটি হবে শিবসাগরে। এর আগে হাফলঙের অধিবেশন। এই প্রাক-শতবর্ষ কর্মসূচিকেও ষথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শতবার্ষিকী পালনের সমস্ত পরিকল্পনা রচিত হবে হাফলঙে বসেই। অসম সাহিত্য সভা ডিমাসা ভাষা বিকাশেও গুরুত্ব দিতে চায়, এই মন্তব্য করে রাজবংশী বলেন, ডিমাসা এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন ভাষা। কিন্তু ভারতে তেমন বিস্তৃতি পায়নি। এ বারের অধিবেশনের মাধ্যমে তাঁরা ডিমাসাদের সাহিত্য-সংস্কৃতিকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে চান। এখান থেকেই ডিমা হাসাও জেলা তার আর্থ-সামাজিক উন্নতির রূপরেখা প্রস্তুত করতে সক্ষম হবে বলেও দাবি তাঁর।
ডিমা হাসাও জেলা সাহিত্য সভা এমন এক অধিবেশনের জন্য হাফলঙকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। সংস্থার সভাপতি কল্যাণ দাওলাগুপো বলেন, ‘‘কয়েক বছর থেকে এই জেলার বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। অসম সাহিত্য সভার অধিবেশন এই গুমোট ভাব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।’’
অধিবেশন সার্থক করে তুলতে একটি অভ্যর্থনা সমিতিও গঠন করা হয়েছে। এতে রাজ্যপাল পি বি আচারিয়া ও মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে মুখ্য উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রাখা হয়েছে। পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের কার্যবাহী সদস্য মহেন্দ্র কেম্প্রাইকে সমিতির সভাপতি করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঘনশ্যাম নাথকে।