প্রতীকী ছবি।
কণ্ঠরোধের অভিযোগে সরব জম্মু-কাশ্মীরের সংবাদমাধ্যম। তাদের বক্তব্য, সত্য পরিবেশনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের তরফে উত্তরোত্তর চাপ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার মাধ্যমে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রভাবিত করা হচ্ছে সংবাদমাধ্যমকে।
রাজ্যের বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক ‘গ্রেটার কাশ্মীর’-এর সম্পাদক ফৈয়াজ় কালুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনআইএ। জঙ্গি নেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পরে সংবাদ পরিবেশনের ধরন নিয়ে গোয়েন্দারা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে শোনা যায়। নিজের সংবাদ সংস্থায় টাকার জোগান নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছেন তিনি। দু’দশকের পুরনো মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে একটি উর্দু দৈনিকের সম্পাদক আফাক গুলাম জিলানি কাদরিকে। গ্রেফতার করা হয়েছে একটি পত্রিকার সাংবাদিক আসিফ সুলতানকেও।
গত বছরের জুন থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে জম্মু-কাশ্মীরে। অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন, কাশ্মীর সমস্যায় কড়া পথই নেবেন তিনি। শ্রীনগরের বিভিন্ন সাংবাদিক ও দৈনিকের কর্ণধারদের দাবি, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের খবরের ক্ষেত্রে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য। একটি ইংরেজি কাগজের সম্পাদক জানিয়েছেন, পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে চার-পাঁচ মাস ধরে কোনও দৈনিকের প্রথম পাতায় থাকছে না আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের খবর। তাঁরা মনে করছেন, নিষেধ অমান্য করলে কোপ পড়তে পারে সরকারি বিজ্ঞাপনে। ওই সম্পাদক আরও জানান, উচ্চ পর্যায়ের এক নিরাপত্তা অফিসারের সঙ্গে বৈঠকে তাঁদের বলে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যের দৈনিকগুলি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ও পাকিস্তানকে অযথা গুরুত্ব দিচ্ছে। কোন খবর কী ভাবে পরিবশন করা হবে, তাতেও হস্তক্ষেপ করছেন নিরাপত্তা আধিকারিকেরা। এক প্রবীণ সাংবাদিক জানালেন, দীর্ঘদিন ধরে হুরিয়তের খবর করতেন তিনি। এখন তাঁকে শুধু পরিবেশ সংক্রান্ত খবর লিখতে বলা হয়েছে।
ফলে আখেরে প্রশ্নের মুখে সংবাদমাধ্যমের মূল্যবোধ, নৈতিকতা। এক প্রবীণ সাংবাদিকের মন্তব্য, ‘‘কোনও প্রতিষ্ঠানকে যখন নিরন্তর চাপের মধ্যে রাখা হয়, তখন স্বাধীন ভাবে কাজ করা কী ভাবে সম্ভব?’’