পশ্চিমবঙ্গের এই ব্যাঙটি এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত।
বন-জঙ্গলে নয়, একেবারে বসতি এলাকার মধ্যেই এত দিন লাফিয়ে বেড়াচ্ছিল তারা। কিন্তু বোঝা যায়নি পশ্চিমবঙ্গের ওই ব্যাঙটি এখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত। প্রজাতির এক নতুন সদস্য!
সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিতির সূত্রে উত্তর ২৪ পরগনার বাদু এলাকায় দেখতে পাওয়া ব্যাঙটির ছবি গুয়াহাটির উভচর বিশেষজ্ঞ জয়াদিত্য পুরকায়স্থকে পাঠান শিবাজী মিত্র। জানতে চান ব্যাঙটির গোত্র-পরিচয়। ছবি দেখেই জয়াদিত্য বোঝেন, এমন ব্যাঙের সঙ্গে পরিচিত অন্য ব্যাঙদের অনেকই অমিল রয়েছে। আরও ছবি পাঠাতে বলেন তিনি। কিন্তু তার আর দেখা মেলেনি।
গত বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাধুরহাট এলাকার কিংশুক মণ্ডল ওই একই ব্যাঙের কয়েকটি ছবি জয়াদিত্যকে পাঠান। উত্তেজিত জয়াদিত্য পৌঁছন কলকাতায়। এরপর চলে ওই ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা। মধুরিমা দাস জিনগত বিশ্লেষণ চালিয়ে নিশ্চিত হন, ব্যাঙটি ‘পলিপেডেটস’ পরিবারভুক্ত।
আরও পড়ুন: ‘খালি হাতে ঘুরি না’, মধ্যপ্রদেশ সরকারকে হুমকি দিয়ে ফের বিতর্কে কৈলাসপুত্র
উভচরবিদ ইন্দ্রনীল দাস ও টিমের বাকি সকলে ব্যাঙটির ত্বকের রঙ ও প্রকৃতি, আকার, ব্যবহার নিয়ে দীর্ঘ পরীক্ষার পরে নিশ্চিত হন, এটি নতুন সদস্য। নাম দেওয়া হয় ‘পলিপেডেটস বেঙ্গলেনসিস’। ইংরাজি নামকরণ হয়েছে, ‘ব্রাউন ব্লচ্ড বেঙ্গল ট্রি ফ্রগ’। এই ব্যাঙের শরীরে ৬ থেকে ৯টি গাঢ় বাদামি গোল দাগ দেখা যায়। চোখের মাঝখানে দু’টি তেকোণা দাগ। বাস মূলত বসতি এলাকার বাঁশ, কলা বা কচু গাছে। মাঝারি আকারের এই ব্যাঙের পুরুষদের দৈর্ঘ্য গড়ে ৫০.৩ মিলিমিটার ও স্ত্রীদের দৈর্ঘ্য গড়ে ৭২ মিলিমিটার। এই নতুন ব্যাঙ নিয়ে গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ‘জুট্যাক্সা’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
জয়াদিত্য বলেন, “এই ব্যাঙটি গেছো ব্যাঙ পরিবারের ২৬তম সদস্য।’’