এই রকমই দেখতে হবে নতুন যুদ্ধবিমান। ছবি: টুইটার থেকে
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে তেজস-এন যুদ্ধবিমান। প্রাথমিক পরীক্ষায় উতরে যাওয়ার পর এ বার সেই তেজস যুদ্ধবিমানের আরও উন্নত সংস্করণ তৈরির জন্য ছাড়পত্র দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সে ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তিতে এই প্রথম, জোড়া ইঞ্জিনের যুদ্ধবিমান তৈরি হবে। তেজস প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যারোনটিক্যাল ডেভলপমেন্ট এজেন্সি বা এডিএ-কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এগিয়ে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রথম আত্মপ্রকাশ করবে তেজসের এই নয়া যুদ্ধবিমান।
লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট বা হালকা গোত্রের যুদ্ধবিমান তেজস সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছে এডিএ। একক ইঞ্জিনের সেই যুদ্ধবিমান ভারতীয় বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে গোয়ার উপকূলে নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ ‘আইএনএস বিক্রমাদিত্য’ থেকে উড়ান ও অবতরণের পরীক্ষা করা হয় সেই তেজসের। তাতে পুরোপুরি সফল তেজসের দু’টি নতুন ‘প্রোটোটাইপ’।
এর পর লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিন-ভারত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে গত ২২ মে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেখানেও তেজসের এই বিষয়টি আলোচনা হয়। তার পরেই কেন্দ্রের তরফে এডিএ নতুন যুদ্ধবিমান তৈরির সবুজ সঙ্কেত পেয়েছে বলে সূত্রের খবর।
‘আইএনএস বিক্রমাদিত্য’-এ বেশ কয়েকবার অ্যারেস্টেড ল্যান্ডিং করানো হয়েছে তেজসের। তাতে দেখা গিয়েছে, ‘অ্যারেস্টর হুক’-এর সাহায্যে মাত্র ৯০ মিটারের মধ্যে গতিবেগ ২৪৪ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনতে পেরেছে তেজস। বিক্রমাদিত্যের রানওয়ের দৈর্ঘ্যও ৯০ মিটারই। নৌবাহিনীতে পরে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে আরও একটি যুদ্ধজাহাজ ‘আইএনএস বিক্রান্ত’-এর। তারও রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার। ফলে বিক্রান্ত থেকেও ওঠানামায় কোনও সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন: হাতির মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় দেশ, তদন্তের নির্দেশ কেরল সরকারের
করোনাভাইরাস এবং লকডাউনের জেরে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে সম্প্রতি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রকল্পের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে স্বনির্ভরতা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই তেজসের নতুন এই যুদ্ধবিমান তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন।
আরও পড়ুন: ট্রেন থামলেই চুপটি করে নেমে পড়ছেন তাঁরা
তেজস তৈরির সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই যুদ্ধবিমান তৈরি হলে, সেটা হবে বায়ুসেনার অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট। তবে এটাও ঠিক যে বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িংয়ের তৈরি ‘এফ-এ ১৮ সুপার হর্নেট’ (মার্কিন নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত) বা ‘মেরিন রাফাল’-এর (ফরাসি নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত) মতো শক্তিশালী হবে না। তাঁদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত তিনটি মডেলের কথা ভাবা হচ্ছে। সেগুলি নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।