ছবি: সংগৃহীত।
ক্রমশ তীব্র হচ্ছে বিজেপি-শিবসেনার স্নায়ুর লড়াই। কুর্সি দখলের যুদ্ধে প্রথমে পিছিয়ে গেলেও ফের একবার ঝাঁপানোর ইঙ্গিত দিল এনসিপি ও কংগ্রেস। আজ দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে রাতে বা আগামী কাল দিল্লি যাবেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার। সম্ভবত রবিবার বা সোমবার বৈঠক করবেন সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে। মহারাষ্ট্রের রাজনীতির প্রেক্ষিতে ওই বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের গত ক’দিনের অচলাবস্থায় আজ নতুন করে গতি আনেন কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ হুসেন দলওয়াই। শুরু থেকেই শিবসেনাকে সমর্থনের পক্ষে থাকা হুসেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে সমস্ত সম্ভাবনা খোলা রাখার প্রশ্নে সওয়াল করেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘‘অতীতে শিবসেনা বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিভা পাটিল থেকে প্রণব মুখোপাধ্যায়। শিবসেনা সমর্থন করেছিল কংগ্রেস প্রার্থীদের।’’ চিঠিতে দলওয়াই আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলেই অতীতের মতো কংগ্রেসের বিধায়কদের ভাঙাতে নেমে পড়বে। সেখানে শিবসেনার হাত ধরে সরকার গড়লে মহারাষ্ট্রে নতুন করে দলের শক্তিবৃদ্ধি হবে। সুশীল কুমার শিন্ডে, মল্লিকার্জ্জুন খড়্গের মতো নেতারা দলওয়াইয়ের মতের বিরোধিতা করলেও, বিজেপির উপরে চাপ বাড়াতে ওই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে শিবসেনা।
পরিস্থিতি দেখে সক্রিয় হয়েছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার। সূত্রের মতে, বৃহস্পতিবার শিবসেনার সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে পওয়ারের বৈঠকের পরে উদ্ধবের সঙ্গে একপ্রস্থ ফোনে কথা হয় এনসিপি প্রধানের। দু’পক্ষই অবশ্য তা অস্বীকার করেছে। এর পরই এনসিপি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মরাঠা স্ট্রংম্যান। তাঁর সঙ্গে কথা হয় এমএনএস নেতা রাজ ঠাকরেরও। তার পরেই এনসিপি সূত্রে জানানো হয়, সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি যাচ্ছেন শরদ। দলের নেতা অজিত পওয়ার জানিয়েছেন, রবি বা সোমবার দু’জনের কথা হবে।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে বিধায়ক ভাঙানোর কলকাঠি অমিতেরই! ফাঁস ইয়েদুরাপ্পার অডিয়ো রেকর্ড
প্রথমে ঠিক ছিল সোমবার সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন শরদ। কিন্তু সোমবার দেবেন্দ্র ফডণবীস রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গঠনের দাবি পেশ করতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকে বৈঠক এগিয়ে আনার চিন্তাভাবনা শুরু হয় দু’পক্ষে। সরকারি ভাবে অবশ্য এনসিপি সূত্রের দাবি, দেশের বেহাল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করতে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন পওয়ার। কিন্তু আপাতত ওই বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে যুযুধান সব পক্ষ।
বিজেপির পক্ষে তাদের সাহায্য ছাড়া যে সরকার গড়া অসম্ভব, তা স্পষ্ট হতেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব থেকে মন্ত্রক বণ্টন— সব ক্ষেত্রে পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণ মেনে চলার পক্ষে অনড় অবস্থান নেয় শিবসেনা। ফল প্রকাশের পরে প্রায় দশ দিন কেটে গেলেও কাটেনি জোট জটিলতা। উল্টে মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা তথা গত সরকারের অর্থমন্ত্রী সুধীর মুনগন্টিওয়ার বলে বসেন, ৭ নভেম্বরের মধ্যে সরকার গড়া না-হলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে। জবাবে মুখ খুলে শিবসেনার সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি কি বিজেপির পকেটে? সবক’টি সম্ভাবনা খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া সম্ভব নয়।’’ রাউতের কথায়, শিবসেনা জোট ভাঙার পক্ষপাতী নয়। কিন্তু পঞ্চাশ-পঞ্চাশ সমীকরণ না মানলে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানো সম্ভবও নয়।