গত মাসের ২৫ থেকে ২৭ তারিখ নেপাল সফরে গিয়েছিলেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তার পরেই দেউবার ভারত সফর কূটনৈতিক দিক থেকেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
জেপি নড্ডার সঙ্গে নয়াদিল্লিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
তিন দিনের সফরে আজ নয়াদিল্লিতে এলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। তাঁর সফরসঙ্গী নেপালের এক শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। দেউবার সঙ্গে এসেছেন স্ত্রী আরজ়ুও।
গত জুলাইয়ে নেপালের মসনদে প্রত্যাবর্তনের পরে এই প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ভারত সফরে এলেন দেউবা।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইট করে জানিয়েছেন, বিশেষ বন্ধুকে স্বাগত। আজ বিকেলে বিজেপি অফিসে যান দেউবা। তাঁর দল নেপালি কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিজয় চৌথাইওয়ালে জানিয়েছেন, বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার আমন্ত্রণে বিজেপি অফিসে গিয়েছিলেন দেউবা। তাঁর দলের শীর্ষ নেতৃত্বও উপস্থিত ছিলেন।
আগামিকাল হায়দরাবাদ হাউসে মোদীর সঙ্গে দেউবার বৈঠকে বসার কথা। নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করেছেন মোদী। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন দেউবা। আজ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করছেন দেউবা। আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির পাশাপাশি চলতি ভারত সফরে বারাণসীতেও যাওয়ার কথা নেপালের প্রধানমন্ত্রীর।
গত মাসের ২৫ থেকে ২৭ তারিখ নেপাল সফরে গিয়েছিলেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তার পরেই দেউবার ভারত সফর কূটনৈতিক দিক থেকেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
দেউবার প্রেস চিফ গোবিন্দ পারিয়ার জানিয়েছেন, চলতি সফরের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ৫০ জন। চার জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী, সরকারের উচ্চপদস্থ আমলা এবং ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন সেই দলে। পারিয়ার জানিয়েছেন, গত কাল এক প্রস্ত বৈঠকের পরে প্রতিনিধি দল চূড়ান্ত হয়। সেই দলে ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী নারায়ণ খাড়কা। এ ছাড়াও রয়েছেন পম্পা ভূসল, বিরোধ খাটিওয়াড়া, মহেন্দ্র রায় যাদব।
চলতি সফরের বিভিন্ন বৈঠকে ভারত-নেপাল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে। ভারতের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও বৈঠক করবেন দেউবা।
এ বছরের জানুয়ারিতেই ভারতে সফরে আসার কথা ছিল দেউবার। সেই সময়ে গুজরাতে ‘বিজ়নেস সামিট’-এও যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে ওই সম্মেলন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় দেউবার সফরও বাতিল হয়।
এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সংক্রান্ত সম্মেলনে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় গত বছরের নভেম্বরে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন দেউবা। করোনা অতিমারিতে নেপালে অত্যাবশ্যক ওষুধ ও টিকা সরবরাহ করায় গ্লাসগোর বৈঠকে ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন দেউবা।
২০১৯ সালের মে মাসে মোদীর দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তার আগে ২০১৮ সালে কাঠমান্ডুতে চতুর্থ বিমস্টেক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোদী।
নেপালের পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে জিতে দেউবা পঞ্চম বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন মোদী। এ বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পঞ্চম বার ভারত সফরে এলেন দেউবা। এর আগে ২০১৭, ২০০৪, ২০০২ এবং ১৯৯৬ সালেও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ভারত সফরে এসেছিলেন দেউবা।