ঈশ্বর পোখরেল এবং কে পি শর্মা ওলি— ফাইল চিত্র।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর ইঙ্গিত দিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। বুধবার ওলি তাঁর মন্ত্রিসভার রদবদল করেছেন। উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখরেলকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরিয়েছেন তিনি। আপাতত তাঁকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করে রাখা হয়েছে।
‘ভারত বিরোধী’ এবং ‘চিন পন্থী’ হিসেবে পরিচিত ঈশ্বরের এই অপসারণ, নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রয়াস হিসেবেই দেখছেন সে দেশের রাজনীতির কারবারিরা। সাম্প্রতিক জমি বিবাদের জেরে একাধিক বার প্রকাশ্যে ভারতের কড়া সমালোচনা করেছিলেন ঈশ্বর। সম্প্রতি চিন থেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ‘কিট’ কেনার আর্থিক দুর্নীতিতেও তাঁর নাম জড়িয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মন্ত্রিসভার রদবদলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছেন ওলি। আগামী ৩ নভেম্বর ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নরবণে নেপাল সফরে যাবেন। তার আগে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি পরিচালিত সরকারের এই পদক্ষেপ নয়াদিল্লি-কাঠমান্ডু সম্পর্কে তিক্ততা কিছুটা কমাবে বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের দাবি।
ভারতীয় এলাকা কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরাকে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে জুন মাসে নেপালের সংসদে তা পাশ করানোর পরে তিক্ততা তৈরি হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। নয়াদিল্লির আপত্তি উড়িয়ে উত্তরাণ্ডের ওই তিন এলাকার প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার জমি নেপালের ম্যাপে জোড়ার পরে তা অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং গুগলেরও দ্বারস্থ হয় ওলি সরকার। এমনকি, গত সেপ্টেম্বরে নেপালের শিক্ষা মন্ত্রক সেই নতুন মানচিত্র সম্বলিত পাঠ্যবই প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: টিআরপি জালিয়াতির অভিযোগে নিউজ চ্যানেলের রেটিং বন্ধ তিন মাস
নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সরকারের এই পদক্ষেপের পিছনে চিনের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যেই। জেনারেল নরবণে সম্প্রতি মানচিত্র-বিতর্কে বেজিংয়ের ‘ভূমিকা’র কথা বলেছিলেন। এর পরে ঈশ্বর ভারতীয় সেনায় কর্মরত গোর্খা সেনাদের ভাবাবেগ খুঁচিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘জেনারেল নরবণের এই মন্তব্যের ফলে ভারতীয় সেনায় কর্মরত নেপালি গোর্খা সেনাদের আনুগত্যে চিড় ধরাবে।’’
আরও পড়ুন: রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছাবসর চেয়ে মুকুল-পুত্রের ফেসবুক পোস্ট
ঈশ্বরের মন্তব্য নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ জানায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিনের রীতি মেনে ভারতের সেনাপ্রধান পদাধিকার বলে নেপালের সাম্মানিক সেনাপ্রধান পদ পেয়ে থাকেন। একই ভাবে ভারতের সাম্মানিক সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পান নেপালের সেনাপ্রধান।