অলওয়ারে গণপিটুনিতে মৃত্যুর পর ঘটনাস্থলে সরেজমিন তদন্তে পুলিশ।
জিপে গণপিটুনিতে গুরুতর জখম আকবর। পুলিশ তখন গরুর জন্য গাড়ি খুঁজছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আয়েশ করে চা খাচ্ছে। অলওয়ার কাণ্ডে এমনই চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গণপিটুনির পর আকবরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ কোনও তৎপরতাই দেখায়নি। উল্টে গদাই লস্করি চালে হাসপাতালে নিয়ে যেতে প্রায় তিন ঘণ্টা দেরি হয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে আকবরের।
ঘটনার পর ঠিক কী কী ঘটেছিল?
জানা গিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে অলওয়ারের লালওয়ান্ডিতে গণপিটুনির পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। রাত একটায় উদ্ধার করে গণপিটুনিতে মারাত্মক জখম আকবরকে। আর হাসপাতালের রেজিস্টারের তথ্য অনুযায়ী, আকবরকে হাসপাতালে আনা হয় ভোর চারটের সময়। মাঝের তিন ঘণ্টা সময় কী করছিল পুলিশ, যেখানে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে যেতে আধঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিটের বেশি সময় লাগার কথা নয়।
তাহলে মাঝের সময়টা কী করছিল পুলিশ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই পুলিশের একের পর এক গাফিলতির নমুনা উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, আকবরকে উদ্ধারের পরই তাঁদের গরুগুলির জন্য গাড়ির খোঁজ শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। সেই বন্দোবস্ত হওয়ার পর ঘটনাস্থল ছাড়েন তাঁরা। এরপর আকবরকে নিয়ে স্থানীয় থানায় যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে স্নান করানো হয়। তারপর আবার তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু তারপরও সোজা হাসপাতাল নয়। মাঝ রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রীতিমতো আয়েশ করে চা খান তাঁরা। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। এমনই দাবি করেছে এনডিটিভি।
আরও পড়ুন: মোদীর জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলেই বাড়ছে গণপিটুনি’, বলছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
কিন্তু গণপিটুনিতে গুরুতর জখম, মরণাপন্ন একজনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পুলিশের এই গড়িমসির কোনও কারণ আপাতত খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেন আক্রান্ত হাসপাতালে নেওয়ার আগে গরুর জন্য গাড়ির খোঁজ করা হল, কেনই বা আকবরকে স্নান করানো হল, তার কোনও সদুত্তর এখনও মেলেনি। আর এই গাফিলতির পর অনেকেই মনে করছেন, দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হত।
আরও পড়ুন: মৃতকে যাবজ্জীবন, এক বছর পর ভুল শোধরাল সুপ্রিম কোর্ট
শুক্রবার গভীর রাতে গরু কিনে বাড়ি ফেরার পথে গরু পাচারকারী সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হন আকবর। তাঁর এক সঙ্গী পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।