প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। —ফাইল চিত্র।
হামাস এবং ইজ়রায়েলের যুদ্ধকে ঘিরে ভারতের অবস্থান নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে মুসলিম প্রধান দেশগুলিতে প্রশ্ন উঠবে কি না, তা এখনই স্পষ্ট নয়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কংগ্রেসের পর এ বার আর এক বিরোধী দল এনসিপি-র নেতা শরদ পওয়ার মোদী সরকারের সমালোচনা করলেন। তাঁর বক্তব্য, প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে মনমোহন সিংহ, এমনকি বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী পর্যন্ত চিরকাল দৃঢ় ভাবে প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু ‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে’ এই প্রথম ‘প্রকৃত সমস্যা না দেখে’ ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মুম্বইয়ে দলীয় কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় পওয়ার বলেন, “গোটা ভূখণ্ডটাই ছিল প্যালেস্টাইনের, যেটা দখল করেছে ইজ়রায়েল। ওই জমি, বাড়িঘর সমস্তটাই প্যালেস্টাইনবাসীর ছিল, যা তাঁদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ইজ়রায়েল এ ক্ষেত্রে বহিরাগত। জবরদখল করে তারা নিজের দেশ গড়েছে।”
এরপরই পওয়ার ভারতের প্রসঙ্গে আসেন। পওয়ারের কথায়, “জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ী —এঁদের সবার ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন নিয়ে একই মত ছিল। এটা ভারত সরকারের বরাবরের অবস্থান। ভারত বরাবরই সেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে থাকে, যাঁরা ভূভাগের মূল অধিবাসী।” তিনি মোদীকে নিশানা করে বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে এই প্রথম বার আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ালেন, প্রকৃত বিষয়টিকে অবজ্ঞা করলেন। এ ব্যাপারে অন্তত এনসিপি-র অবস্থান স্পষ্ট। যাঁরা ভূভাগের মূল অধিবাসী, আমরা তাঁদের পাশে আছি।”
বিদেশ মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, ভারত আদৌ প্যালেস্টাইন বিরোধী নয়। কিন্তু হামাস এবং প্যালেস্টাইন-এর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা— এই দু’টি বিষয়কে আলাদা করে দেখার অবস্থান নিয়েছে সাউথ ব্লক। অর্থাৎ হামাসের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে নিন্দা করছেন প্রধানমন্ত্রী, প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের দাবিকে অগ্রাহ্য করছেন না।
সম্প্রতি জি২০ ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির স্পিকারদের সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। নাম না করে ইজ়রায়েল এবং হামাসের সংঘাতের প্রসঙ্গও টেনেছিলেন তিনি। মোদীর কথায়, “এখন বিশ্ব বুঝতে শুরু করেছে, সন্ত্রাসবাদ সবার জন্যই এক মারাত্মক বিপদ। তা সে যেখানেই ঘটুক, তার কারণ, ফলাফল যা-ই হোক। আজ এটা স্পষ্ট যে সন্ত্রাসবাদ মানবতার বিরোধী। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে একজোট হয়ে লড়তে হবে।”