প্রতীকী ছবি।
জম্মু-কাশ্মীরে যখন বনাঞ্চলে জবরদখল উচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে, তারই মধ্যে জানা গেল, জম্মুতে প্রায় ১০০ একর অরণ্য এলাকা জুড়ে নতুন হাইকোর্ট ভবন, সংশ্লিষ্ট আবাসন ও পার্কিং লট তৈরির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ন্যাশনাল বোর্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ (এনবিডব্লিউএল)। জম্মু-কাশ্মীরের আইন ও বিচার বিভাগের ওই প্রস্তাবে গত মাসে অনুমোদন দিয়েছে তারা। জম্মুর বর্তমান হাইকোর্ট ভবনটি তৈরি হয়েছে মাত্র ১৫ বছর আগে।
জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রীয় শাসিত এলাকা হওয়ার সপ্তাহ দুই আগে, ২০১৯-এর ১৫ অক্টোবর রাজ্য বন দফতর শর্ত দিয়েছিল, বন ধ্বংস করে আবাসন বা ভবন তৈরি করা চলবে না। কিন্তু তার পরেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে প্রকল্পটির প্রস্তাব।
প্রশ্ন উঠছে প্রয়োজনে চেয়ে ঢের বেশি জমি চাওয়া নিয়ে। অনেক বার সম্প্রসারণের পরেও দিল্লি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট মিলিয়ে মোট জমির পরিমাণ বর্তমানে ৫১ একর। জম্মু হাইকোর্টের নতুন কমপ্লেক্স গড়তে চাওয়া হচ্ছে তার প্রায় দ্বিগুণ জমি, ১০০ একর! জম্মু-কাশ্মীরের আইন ও বিচার বিভাগের প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মোট আয়তন ৪০.৬৬ হেক্টর। আগামী চার দশকে প্রয়োজনীয় সম্প্রসারণের সুযোগ রেখেও মূল ভবন ও চত্বর তৈরির জন্য তাতে বরাদ্দ রয়েছে ৫ হেক্টর মতো জমি। ৮০ শতাংশ জমিতে ‘গাছে ছাওয়া পার্কিং লট’ করার কথা বলা হয়েছে।
এর ব্যাখ্যা জানতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল আইন ও বিচার সচিব আচল শেঠীর সঙ্গে। কিন্তু ফোনে বা ই-মেলে যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্য বন সংরক্ষক মোহিত গেরাকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন, “প্রকল্পটি ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে। সুতরাং এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।”
জম্মু-কাশ্মীরের জীববৈচিত্র পরিষদের সদস্য তথা প্রাক্তন মুখ্য বনপাল সি এম শেঠের বক্তব্য, তওয়াই নদীর দু’পাশে রামনগর বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য ও বাহু সংরক্ষিত বন জম্মু শহরের দু’টি ফুসফুসের মতো। এদের ক্ষতি হলে এলাকার তাপমাত্রা ও বায়ুর গুণমান বদলে যাবে। জল ও জলীয় বাষ্প সংক্রান্ত ভারসাম্য নষ্ট হবে। তা ছাড়া, বর্তমান হাইকোর্ট ভবনটি মাত্র ১৫ বছরের পুরনো।