Navjot Singh Sidhu

Navjot Singh Sidhu: সিধুর পদত্যাগ, ঘোর অস্বস্তিতে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা, কটাক্ষ ক্যাপ্টেনের

মঙ্গলবার আচমকা পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি। সিধুর সিদ্ধান্ত প্রবল অস্বস্তিতে ফেলল রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৩৮
Share:

ফাইল চিত্র।

ভারতীয় ক্রিকেট দলের ১৯৯৬ সালের ইংল্যান্ড সফর থেকে আচমকা দেশে ফিরে এসেছিলেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। কেন ফিরলেন, সে বিষয়ে কাউকেই কিছু বলেননি। অধিনায়ক-সহ পুরো দলকে বিড়ম্বনায় ফেলার সেই স্মৃতি ফিরিয়ে মঙ্গলবার আচমকা পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।

Advertisement

সিধুর সিদ্ধান্ত প্রবল অস্বস্তিতে ফেলল রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে। তাঁরা সিধুকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করেছেন মাত্র দু’মাস হল। তাঁর দাবি মেনে অমরেন্দ্র সিংহকে সরিয়ে চরণজিৎ সিংহ চন্নীকে সবে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। মাত্র চার মাস পরে পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট। আপাতত দলিত শিখ নেতা চন্নীকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলেও, ভোটে কংগ্রেস জিতলে সিধুকেই মুখ্যমন্ত্রী করা হবে বলে ইঙ্গিত পর্যন্ত মিলছিল। তা সত্ত্বেও কেন সিধু আচমকা পদত্যাগ করলেন, তা নিয়ে তিনি মুখ খোলেননি। তবে তাঁর এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলেছে কংগ্রেস নেতৃত্বকে।

মঙ্গলবার দুপুরে সিধু সনিয়া গাঁধীকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘আপসের ফলে মানুষের চরিত্রে ভাঙন ধরে। আমি পঞ্জাবের ভবিষ্যৎ ও কল্যাণের সঙ্গে কোনও ভাবেই তা করতে পারব না।’ প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেও তিনি কংগ্রেসে থাকছেন বলে সিধুর দাবি। চন্নী অবশ্য বলেছেন, ‘‘সিধু ক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে, তা মিটিয়ে ফেলা হবে। তিনি আমার উপরে ক্ষুব্ধ নন।’’ দলের বিধায়ক বাওয়া হেনরির দাবি, ‘‘সিধুর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি। দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে। ৩-৪টি বিষয় দলে আলোচনা হচ্ছে। হাই কমান্ড সমস্যা মিটিয়ে ফেলবেন।’’

Advertisement

এ দিন যদিও সিধুর পদত্যাগের পরে তাঁর শিবিরের রাজিয়া সুলতানা রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেন। সিধু শিবিরের আরও দুই নেতা প্রদেশ কংগ্রেসের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, নতুন মন্ত্রিসভায় দফতর বণ্টন নিয়ে সিধু অখুশি। বিশেষত উপমুখ্যমন্ত্রী সুখজিন্দর সিংহ রণধাওয়াকে স্বরাষ্ট্র দফতর দেওয়া, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাণা গুরজিৎ সিংহকে মন্ত্রী করা ও অ্যাডভোকেট জেনারেল নিয়োগে আপত্তি সিধুর।

কারণ যা-ই হোক, সিধু পদত্যাগ করে আজ গাঁধী পরিবারকেই সব থেকে বেশি অস্বস্তিতে ফেলেছেন বলে মানছেন কংগ্রেস নেতারা। দলের মধ্যে আপত্তি সত্ত্বেও রাহুল-প্রিয়ঙ্কা সিধুর উপরে বাজি ধরেছিলেন। এমনকি অমরেন্দ্রকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থকে সরাতে পিছপা হননি। পঞ্জাবের প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি সুনীল জাখর বলেন, ‘‘এটা ক্রিকেট নয়। (বিদায়ী?) সভাপতির উপরে কংগ্রেস নেতৃত্ব যে আস্থা রেখেছিলেন, পুরো অধ্যায়ে তাতে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে গেল। পিছনে দাঁড়ানো নেতৃত্বকে এই অদ্ভুত পরিস্থিতিতে ফেলা যায় না।’’

কংগ্রেস সূত্রের খবর, সিধুকে এখনও বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু তিনি সোমবার রাত থেকে কারও ফোন ধরছেন না। পাটিয়ালায় নিজের বাড়িতে ঘাঁটি গেড়েছেন। নিজেদের মধ্যে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার জন্য রাজ্য নেতৃত্বকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এআইসিসি নেতা কে সি বেণুগোপালের মতে, সিধু আবেগের বশে পদক্ষেপ করেছেন। এতে সিধুর ‘অস্থিরমতি’ চরিত্র ফের ফুটে উঠেছে বলে কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা মনে করছেন। তাঁদের মতে, এর পরেও সিধুকে সামনে রেখে ভোটে গেলে, কংগ্রেসকে খেসারত দিতে হবে।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ মঙ্গলবার দিল্লিতেই ছিলেন। তিনি দিল্লিতে এসে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে জল্পনা চলছিল। বিজেপির নেতারা তাঁকে ‘জাতীয়তাবাদী’ বলে প্রশ‌ংসা করে তা উস্কে দিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে সিধু ইস্তফা দেওয়ায় অমরেন্দ্র বলেন, ‘‘আগেই বলেছিলাম, ওঁর (সিধুর) স্থিরতা নেই। আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী পঞ্জাবের জন্য তিনি উপযুক্ত নন।’’ ইংল্যান্ড সফর থেকে ফিরে আসার ঘটনা মনে করিয়ে অমরেন্দ্র বলেন, ‘‘ওটাই সিধুর আসল চরিত্র। উনি জনসভায় লোককে হাসাতে পারেন। তাতে সারবত্তা নেই।’’

অমরেন্দ্রর মতে, সিধু কংগ্রেস ছাড়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন। ভোটের আগে অন্য দলে যোগ দেতে চলেছেন। অমরেন্দ্রর নিজের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রশ্নে তাঁর মিডিয়া উপদেষ্টা রবীন ঠুকরালের দাবি, ক্যাপ্টেন ব্যক্তিগত কাজে দিল্লি এসেছেন। নতুন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য তাঁকে দিল্লির কপূরথালা হাউস ফাঁকা করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement