নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। —ফাইল চিত্র।
বছর তিনেক আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়ে পাক সেনা প্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়াকে আলিঙ্গন করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সময়েও পঞ্জাবের বিদায়ী কংগ্রেস নেতা অমরেন্দ্র সিংহ তাঁকে পাক প্রধানমন্ত্রীর বন্ধু বলে বিঁধেছিলেন। সেই পাক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েই মন্তব্য করে ফের বিতর্কে জড়ালেন পঞ্জাবের কংগ্রেস প্রধান তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। আজ সকালে করতারপুর করিডর দিয়ে পাক পঞ্জাবের দরবার সাহিব গুরুদ্বার দর্শনে গিয়েছিলেন সিধু। সেখানেই কিছু পাক আধিকারিকের সামনে তিনি বলেন, ইমরান তাঁর ‘বড় ভাই’-এর মতো।
আজ সকালে পাক পঞ্জাব প্রদেশের ওই গুরুদ্বার দর্শনে যান সিধু। বিজেপি নেতাদের ২১ জনের একটি প্রতিনিধি দলও আজ ওই গুরুদ্বার দর্শনে যান। বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে ছিলেন পঞ্জাবের বিজেপি সভাপতি অশ্বিনী শর্মা। পরে বিজেপি নেতা অমিত মালবীয় সিধুর একটি ভিডিয়ো টুইট করেন আজ। তাতে দেখা গিয়েছে, সিধুকে মালা দিয়ে সংবর্ধনা জানাচ্ছেন কিছু পাক আধিকারিক। তাঁরা সিধুকে জানান, পাক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হয়ে তাঁরা এসেছেন। জবাবে সিধুকে বলতে শোনা যায়, “আমি সম্মানিত বোধ করছি। উনি (ইমরান) আমার বড় ভাইয়ের মতো। এত সম্মানের আমি সত্যিই যোগ্য নই। কিন্তু আপনাদের ধন্যবাদ।” তবে একই সঙ্গে করতারপুর করিডর খোলার জন্য দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সিধু।
করতারপুর করিডরের সেই বিতর্কিত ভিডিয়ো ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। অমিত মালবীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় সিধুর সেই ভিডিয়ো টুইট করে লেখেন, “রাহুল গাঁধীর প্রিয় নভজ্যোৎ সিংহ সিধু ইমরান খানকে বড় ভাই বলে ডেকেছেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে গাঁধী ভাই-বোনেরা প্রবীণ অমরেন্দ্র সিংহের বদলে সিধুকে বেছেছেন।” কংগ্রেস তথা রাহুল গাঁধীকে বিঁধে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের মন্তব্য, “বিরোধী দল আসলে বোকো হারাম বা আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যে হিন্দুত্ব দেখতে পায়। আর খানের মধ্যে ভাই জান (বড় ভাই)।” সম্প্রতি হিন্দুত্ব নিয়ে বিজেপিকে এক হাত নিয়েছিলেন রাহুল। আজ তারই পাল্টা দেন সম্বিত। মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা রাম কদমও সিধুর সমালোচনায় সরব হয়েছেন।
বিষয়টি ভাল চোখে দেখছেন না কংগ্রেস নেতাদের একাংশও। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি সরাসরি সিধুকে কটাক্ষ করে বলেন, “ইমরান খান কারও বড় ভাইয়ের মতো হতে পারেন। কিন্তু ভারতের কাছে উনি সেই টোপ, যার মাধ্যমে আইএসআই এবং পাক সেনা ড্রোনের মাধ্যমে পঞ্জাব সীমান্ত পেরিয়ে মাদক এবং নিয়ন্ত্রণ রেখা দিয়ে অস্ত্র ও জঙ্গি ভারতে পাচার করে।” তাঁর আরও প্রশ্ন, “পুঞ্চে ভারতীয় সেনা-জওয়ানদের আত্মবলিদান কি আমরা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলাম?”