ফাইল চিত্র।
জেলে বসে রোজ়মেরি চা খাচ্ছেন নভজ্যোত সিধু। প্রাতরাশে চিয়া সিডস, আখরোটও আছে। দেওয়া হচ্ছে ফ্যাট ছাড়া দুধ। তাঁর খাদ্যতালিকা দেখে হতবাক অনেকেই। প্রশ্ন করছেন, সিধু জেলে আছেন, নাকি স্পা-তে!
৩৪ বছর আগে পথ দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যুর মামলায় এক বছরের কারাদণ্ড হয়েছে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন ক্রিকেট খেলোয়াড় নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর। কিন্তু তাঁর সাজা নয়, বরং কারাবাসের মেনুই আপাততচর্চার বিষয়বস্তু।
রায় ঘোষণার পরে সিধুকে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শারীরিক অবস্থা ভাল নেই জানিয়ে কোর্টের কাছে কয়েক সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। কিন্তু আদালত তাঁর আর্জি খারিজ করে দেন। পরিবর্তে তাঁর জন্য স্পেশাল ডায়েটের আয়োজন করে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কোর্ট। তাতে সিধুর জন্য বরাদ্দ হয়েছে —সামান্য তেলে হাল্কা ভাজা আনাজ, পেকান নাট, অ্যাভোকাডো আর টোফুর মতো খাবার। এই কংগ্রেস নেতার সহকারী জানিয়েছেন, সিধুর শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে ওই ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়েছে। সকালে রোজ়মেরি চা, ডাবের জল বা চালকুমড়োর জুস। তার পর প্রাতরাশে ল্যাকটোজ়-ছাড়া দুধ, এক চামচ ফ্ল্যাক্স, সানফ্লাওয়ার, মেলন বা চিয়া বীজ, পাঁচ-ছ’টা আমন্ড, একটা আখরোট, দু’টো পেকান নাট। কিছু পরে বিটের রস, বা তুলসী-পুদিনা কিংবা সেলেরি পাতার জুস। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কোনও একটা ফল দেওয়া হবে তাঁকে। দুপুরে সিধুকে দেওয়া হবে রুটি, তরকারি, রায়তা, শসা-লেটুস,লেবু দিয়ে স্যালাড ও এক গ্লাস লস্যি। সন্ধ্যায় ফের ফ্যাট-ছাড়া দুধ। রাতে সুপ। এ ছাড়াও বিকল্প খাবারের লম্বা তালিকা ধরানো হয়েছে জেল কর্তৃপক্ষকে।
সিধুর জেলের মেনু শুনে চক্ষু চড়কগাছ অনেকেরই। জেলে তো নয়, যেন কোনও ক্লাবের খাওয়াদাওয়া! অন্যান্য বন্দিদের মতো কায়িক পরিশ্রমও করতে হবে না সিধুকে। পাটিয়ালা সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সশ্রম কারাবাসে সিধুকে অফিসের খাতা লেখার কাজকর্ম করতে দেওয়া হবে। কারাবিভাগের এক কর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানিয়েছেন, সিধুর মতো হাই-প্রোফাইল বন্দির নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই জেল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিজের ১০ নম্বর ব্যারাকের বাইরে বেরোতে দেওয়া হবে না সিধুকে। তাঁর পাশেই ১১ নম্বর ব্যারাকে ‘পড়শি’ শিরোমনি আকালি দলের নেতা বিক্রম সিংহ মাজিথিয়া।
কারাবিভাগের ওই কর্তা বলেন, ‘‘নানা ধরনের অপরাধী রয়েছে জেলে। অনেকে মাদকাসক্ত, পাচারের অপরাধে বন্দি। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই দীর্ঘদিন ধরে সরব ছিলেন সিধু। ফলে অন্যান্য বন্দিদের মতো কাজ তাঁকে দিয়ে করাতে গেলে নিরাপত্তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকে যাবেই। তাই অফিসের কেরানির কাজ দেওয়া হবে। যেমন খাতায় রেকর্ড তোলা, কোনও বিচারের কপির সারমর্ম তৈরি ইত্যাদি।