বুদ্ধিমতী এবং সুন্দরী। এই উপমাটি বিলক্ষণ তাঁর সঙ্গে জুতসই। অঙ্কের কঠিন সমস্ত সমস্যা নিমেষে পরীক্ষা খাতায় সমাধান করে ফেলেন।
শুধু অঙ্কই বা কেন? ইংরাজি, ভূগোল, ইতিহাস, দেশের সংবিধান— প্রায় সমস্ত বিষয়েই তাঁর জ্ঞান ঈর্ষণীয়। বইয়ের পাতায় তাঁর অবাধ বিচরণের পাশাপাশি নেটমাধ্যমের পাতাতেও পরিচিত মুখ তিনি।
ইনস্টাগ্রামে তাঁকে দেখে যে কেউ কোনও টিকটিক তারকা কিংবা বলিউড তারকা বলে ভুল করে বসতেই পারেন। কিন্তু এগুলির কোনওটিই নন তিনি।
তিনি বিহারের একজন আইপিএস অফিসার। নাম নভজোৎ সিমি। ২০২০ সালে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
এর আগে পিসিএস (পঞ্জাব সিভিল সার্ভিস) অফিসার হিসাবে কাছে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তিনি পঞ্জাবেরই মেয়ে।
পঞ্জাবের এক তফশিলি পরিবারে জন্ম তাঁর। বাবা ছিলেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অধিকর্তা। মা সংসার সামলাতেন।
তফশিলি হওয়ায় ছোটবেলায় প্রতিবেশী, বন্ধুদের কাছে অনেক কুকথা শুনেছেন নভজোৎ। তাই ছোট থেকেই সরকারি উচ্চপদে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।
পঞ্জাবের একটি বেসরকারি স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন তিনি। তারপর লুধিয়ানার বাবা যশবন্ত সিংহ ডেন্টাল কলেজ থেকে স্নাতক হন।
এরপর দাঁতের ডাক্তারি শুরু করেন। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য ছিল আইপিএস। ফলে চিকিৎসকের কাজ করতে করতেই ইউপিএসসি-র জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন। নয়াদিল্লিতে টিউশনও নিতে শুরু করেন।
প্রথম চেষ্টাতেই আইপিএস হওয়া মুখের কথা নয়। ২০১৬ সালে তিনি প্রথমে পিসিএস (পঞ্জাব সিভিল সার্ভিস) অফিসার হন। ডাক্তারি ছেড়ে প্রশাসনিক পদে যোগ দেন।
তার পরের বছরই তিনি আইপিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সারা দেশের মধ্যে ৭৩৪ র্যাঙ্ক করেন। এখন তিনি পটনায় কর্মরত।
নভজোৎ সম্প্রতি চর্চায় উঠে এসেছিলেন তাঁর প্রেম এবং বিয়ের কারণে। তিনি ২০১৫ ব্যাচের আইএএস অফিসার তুষার সিঙ্গলার প্রেমে পড়েছিলেন।
এই আইএএস অফিসার আবার পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত। সম্প্রতি ভ্যালেন্টাইন ডে-র দিন ৫৬৫ কিমি পাড়ি দিয়ে পটনা থেকে তিনি উলুবে়ড়িয়ায় এসে হাজির হয়েছিলেন।
কাজের চাপে বহু দিন ধরেই তাঁদের ভালবাসার পরিণতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তাই নভজোৎ স্বয়ং প্রেমিক তুষারের অফিসে চলে আসেন বিয়ের জন্য।
দু’জনে রেজিস্ট্রি করে বিয়েও সেরেছেন। তবে কাজের চাপে এখনও কোনও অনুষ্ঠান করতে পারেননি তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গে ভোটপর্ব মিটলে ধূমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন দু’জনে।