নৌসেনায় স্ত্রী বদল কাণ্ড: তদন্তের নির্দেশে কি ঢিল পড়ল মৌচাকে?

বিস্ফোরক অভিযোগ ভারতীয় নৌসেনার কয়েক জন অফিসারের বিরুদ্ধে। পরস্পরের মধ্যে তাঁরা স্ত্রী দেওয়া-নেওয়া করেন, নিজের স্ত্রীকে সহকর্মী বা জুনিয়রের হাতে তুলে দিয়ে সহকর্মী বা জুনিয়রের স্ত্রীকে আপন করে নেন অফিসাররা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৬ ১৭:৩৮
Share:

বিস্ফোরক অভিযোগ ভারতীয় নৌসেনার কয়েক জন অফিসারের বিরুদ্ধে। পরস্পরের মধ্যে তাঁরা স্ত্রী দেওয়া-নেওয়া করেন, নিজের স্ত্রীকে সহকর্মী বা জুনিয়রের হাতে তুলে দিয়ে সহকর্মী বা জুনিয়রের স্ত্রীকে আপন করে নেন অফিসাররা। যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কোচিতে কর্মরত এক নৌসেনা অফিসারের বিবাহ বিচ্ছিন্না স্ত্রী এমনই অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

২০১৩ সালে অভিযোগটি প্রথম সামনে এসেছিল। কিন্তু তখন বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে অভিযোগটির তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়ায় বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।

অভিযোগকারিনী জানিয়েছেন, তিনি তাঁর স্বামীকে এক সিনিয়র অফিসারের স্ত্রীয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছিলেন। অভিযোগকারিনীকেও নাকি বলা হয়েছিল সিনিয়র অফিসারের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে। তিনি প্রতিবাদ করায় সিনিয়র অফিসারের স্ত্রী তাঁকে চড় মারেন এবং শাসানি দেন। কথা না শুনলে ফল খুব খারাপ হবে বলে হুমকি দেন। অভিযোগকারিনীর দাবি তেমনই। আইএনএস কোচির অন্য সিনিয়র অফিসারদের কাছে তিনি ঘটনাটি জানিয়েছিলেন বলেও অভিযোগকারিনীর দাবি। কিন্তু কেউই নাকি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। স্বামীর সহকর্মী এবং সিনিয়র অফিসাররা তাঁর শ্লীলতাহানি করেছিলেন বলেও অভিযোগকারিনীর দাবি। তিনি কোচির হারবার থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি ঘটনাটি জানতে পেরে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু নৌসেনার তরফে মন্ত্রককে জানানো হয়, অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।

Advertisement

অভিযোগকারিনীর দাবি, নৌসেনা অফিসারদের মধ্যে স্ত্রী বদল করার ঘটনা খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে। কেউ চাকরিতে টিকে থাকতে, কেউ উন্নতি করতে আবার কেউ স্বেচ্ছায় স্ত্রী বদলে রাজি হয়ে যান বলে ওই মহিলার দাবি। নৌসেনার বিভিন্ন গেট টুগেদার বা পার্টিতেই এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে বলে তাঁর অভিযোগ।

নৌসেনার অভ্যন্তীরণ তদন্তে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন আখ্যা দেওয়া হলেও অভিযোগকারিনী থামেননি। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর এবং বিচারপতি আর ভানুমতী কেরল পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে এই অভিযোগের তদন্ত করতে।

আরও পড়ুন:

পাকিস্তানকে প্রতারক এবং বিপজ্জনক বলে বেনজির আক্রমণে মার্কিন মিডিয়া

অভিযোগকারিনী সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট সে আবেদন না মানলেও, উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশই দিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের ফলে মৌচাকে ঢিল পড়েছে। স্ত্রী দেওয়া-নেওয়া বা ‘ওয়াইফ সোয়্যাপ’ নাকি কোনও নতুন ঘটনা নয়। শুধু নৌসেনাতেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর আরও বিভিন্ন বিভাগেই নাকি পার্টি বা গেট টুগেদারে এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। কেউ কখনও এর প্রতিবাদ করেননি, তেমন নয়। কিন্তু বিষয়গুলি বার বার ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়েই অনেককে এই ওয়াইফ সোয়্যাপিং কাণ্ড মেনে নিতে হয় বলে একাংশের দাবি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে এর তদন্ত শুরু হলে অনেক রাঘববোয়াল জালে জড়াতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। নৌসেনা তো বটেই, সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য বিভাগও কিন্তু নড়েচড়ে বসেছে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর। অভিযোগকারিনীর দাবি, তিনি অভিযোগ করার পর তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু আর কোনও কিছু চাপা থাকবে না। নৌসেনা কর্তাদের অনেকেই সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর চাপে পড়ে গিয়েছেন বলে ্অভিযোগকারিনীর দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement