জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিককে ইউএপিএ-র বিভিন্ন ধারায় ২০২২ সালের ২৪ মে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। ফাইল চিত্র।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিকের ফাঁসির আর্জি জানানোর পর থেকেই থমথমে কাশ্মীর উপত্যকা। গোটা ঘটনার মধ্যে সংসদ হামলায় দোষী সাব্যস্ত আফজ়ল গুরুর ফাঁসির ছায়া দেখতে পাচ্ছেন কাশ্মীরবাসী। আফজ়লের ফাঁসি নিয়েও প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছিল উপত্যকায়। ২৯ মে এই আর্জির শুনানি হওয়ার কথা।
জেকেএলএফ নেতা ইয়াসিন মালিককে ইউএপিএ-র বিভিন্ন ধারায় ২০২২ সালের ২৪ মে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত, সন্ত্রাস ছড়ানো ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নেন ইয়াসিন। আপাতত তিনি দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেও নিম্ন আদালত জানায়, ইয়াসিনের মামলা ‘বিরলতম’ শ্রেণিতে পড়ে না। ফলে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই দিল্লি হাই কোর্টে আর্জি জানিয়েছে এনআইএ।
গত কাল থেকেই থমথমে কাশ্মীর উপত্যকা। লাল চকের মাইসুমায় ইয়াসিনের বাড়ির আশপাশে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল বাহিনী।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মাইসুমার এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘আমাদের মনে হয় মালিক সাহেবের অবস্থা আফজ়ল গুরুর মতোই হবে। কংগ্রেস লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে আফজ়লকে ফাঁসি দিয়েছিল। সেই ব্যবস্থাই এখনও চলছে।’’ অন্য এক ব্যবসায়ীর মতে, দেশের অন্য প্রান্তের মতো কাশ্মীরবাসীও অসহায়। তাঁর মতে, ‘‘দেশের অন্য প্রান্তের ঘটনাকেও ছোট করে দেখা যায় না। আমাদেরও সব পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।’’ দিল্লি হাই কোর্টে এনআইএ-র আর্জির পরে মালিকের পরিবারের সদস্যেরা কারও সঙ্গে দেখা করেননি।
মালিকের ফাঁসির আর্জি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন পিডিপি-র সভাপতি মেহবুবা মুফতি। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের মতো গণতন্ত্রে এক জন প্রধানমন্ত্রীর হত্যাকারীদেরও ক্ষমা করা হয়েছে। ইয়াসিন মালিকের মতো রাজনৈতিক বন্দির মামলা ফের খতিয়ে দেখা উচিত। এক নতুন রাজনৈতিক জঙ্গির দল দেখা দিয়েছে। তারা ইয়াসিনের ফাঁসির আর্জিকে সমর্থন করছে। এটা আমাদের সামগ্রিক অধিকারের পক্ষে ধাক্কা।’’ ইয়াসিনের ফাঁসির আর্জিকে সমর্থন করেছেন পিডিপি-র প্রাক্তন সদস্য ও প্রাক্তন মন্ত্রী আলতাফ বুখারি। তাঁকেও নিশানা করেছেন মুফতি।