শান্তি বজায় রাখার আর্জি মোদীর। ছবি: রয়টার্স।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ নিয়ে অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হিংসাত্মক প্রতিবাদ থেকে সরে এসে, সকলকে শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে আর্জি জানালেন তিনি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। এমনকি পুলশের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। তা নিয়ে সোমবার মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী। টুইটারে তিনি লেখেন,‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিবাদ দুর্ভাগ্যজনক। আলাপ-আলোচনা এবং মতপার্থক্য গণতন্ত্রের অঙ্গ। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলা কখনওই আমাদের আদর্শ নয়।’’
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘উভয় কক্ষের সমর্থনেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনেই সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ পাশ হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সাংসদদের একটা বড় অংশ একে সমর্থন করেছেন। এই আইন ভারতের শতাব্দী প্রাচীন গ্রহণযোগ্যতা, সামাজিক ঐক্য, সহানুভূতি এবং সৌভ্রাতৃত্বের সংস্কৃতিকেই প্রতিফলিত করে।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কোনও ভারতীয়ের সঙ্গে অবিচার হবে না বলেও এ দিন আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দেশবাসীকে নিশ্চিত করছি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে দেশের কোনও নাগরিক এবং কোনও ধর্মের প্রতি অবিচার করা হবে না। এ নিয়ে কোনও ভারতীয়র চিন্তার কারণ নেই। পড়শি দেশে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন যাঁরা, ভারত ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়ার উপায় নেই যাঁদের, এই আইন শুধু তাঁদের জন্যই।’’
নিজেদের স্বার্থে কিছু গোষ্ঠী দেশে বিভাজন তৈরি করে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তোলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘একজোট হয়ে দেশের উন্নতিতে যোগ দেওয়া, প্রত্যেক ভারতীয় বিশেষ করে দরিদ্র, নিপীড়িত এবং প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়নে জোর দেওয়াই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিভাজন তৈরি করে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছে কিছু গোষ্ঠী, তাদের সুযোগ করে দেওয়া উচিত হবে না। শান্তি, ঐক্য এবং সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রত্যেকের কাছে আমার অনুরোধ, সব ধরনের গুজব এবং মিথ্যাপ্রচার থেকে দূরে থাকুন।’’
অসম, বাংলার পর রবিবার বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে রাতের অন্ধকারে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ুয়াদের পেটানোর অভিযোগ উঠেছে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে একজোটে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তার পরই এ দিন টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী।