লাল কেল্লায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
পর পর এগারো বার। আগামী ১৫ অগস্ট, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লাল কেল্লা থেকে টানা একাদশ বার বক্তৃতা দিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর তৃতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের এটি প্রথম স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জওহরলাল নেহরু টানা ১৭টি বার লাল কেল্লা থেকে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। যা এখনও রেকর্ড। তাঁর কন্যা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দু’দফায় মোট ১৬টি বক্তৃতা দেন। তবে তিনিও টানা এগারোটি বক্তৃতার সুযোগ পেয়েছেন, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত। এ বারের বক্তৃতায় মনমোহন সিংহকে টপকে যেতে চলেছেন মোদী। ১৫ অগস্ট মনমোহন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দিয়েছিলেন
দশটি বক্তৃতা।
স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতাকে ব্যবহার করে অতীতে মোদীকে দেখা গিয়েছে রাজনৈতিক বার্তা দিতে। পাশাপাশি, সরকারের বিভিন্ন নতুন নীতিও ঘোষণা করে থাকেন তিনি ওই দিনে। যে হেতু এই বক্তৃতা মোদীর নতুন সরকারের প্রথম, তাই রাজনৈতিক মহলের নজর থাকবে, আগামী পাঁচ বছরের জন্য কী ঘোষণা করেন তিনি। এই সরকারে বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে শরিক রাজ্যের (বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ) জন্য বিশেষ কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে কিনা, সে দিকেও লক্ষ্য রাখবেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীনতা দিবসের প্রথম বক্তৃতায় (২০১৪) ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’, ‘জনধন প্রকল্প’-সহ একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন মোদী। তার পর থেকে প্রতি বছরই ১৫ অগস্টকে বড় ঘোষণার মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছেন তিনি। সূত্রের খবর এ বছর অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে নারী, যুবা, দরিদ্র এবং কৃষক শ্রেণির প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই গোষ্ঠীগুলির থেকে অন্তত ৪ হাজার প্রতিনিধি যোগ দেবেন লাল কেল্লার অনুষ্ঠানে। জানা গিয়েছে, ১১টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে অতিথিদের। কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী, যুবকল্যাণ মন্ত্রী, মহিলা ও নারী উন্নয়ন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কৃষক, যুব এবং মহিলা অতিথিদের আমন্ত্রণ জানাতে। পাশাপাশি, পঞ্চায়েতি রাজ এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক, আদিবাসী কল্যাণ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রককেও বলা হয়েছে অতিথির তালিকা
তৈরি করতে। প্যারিস অলিম্পিক্সে ভারতীয় প্রতিনিধিদেরও বলা হয়েছে উপস্থিত থাকতে।
গত বছরের স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতাটি ছিল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে। সে বারে ওবিসি ভোটের কথা মাথায় রেখে ‘বিশ্বকর্মা কৌশল যোজনা প্রকল্প’ শুরুর কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লাল কেল্লার প্রাচীর থেকে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় জানিয়েছিলেন, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন থেকে ১৩-১৫ হাজার কোটি টাকার ওই প্রকল্প শুরু হবে। ওই প্রকল্পের কথা বাজেটে ঘোষণা হয়েছিল। তবে মোদীর বক্তৃতায় তা প্রচারিত হয় অনেক বেশি। তার আগের বছর স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিকে সামনে নিয়ে এসেছিলেন মোদী লাল কেল্লার মঞ্চ থেকে। গেরুয়া-সাদা-সবুজ পাগড়িতে হাজির হয়ে চমকে দিয়েছিলেন মোদী।