প্রকাশ্য শৌচমুক্ত নিয়ে মোদীর ঘোষণায় কাঁটা বঙ্গ

স্বচ্ছ ভারত মিশন (শহর)-এর ডিরেক্টর বিনোদ কুমার জিন্দল বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই কোথাও কোনও অসুবিধা রয়েছে যে কারণে এই ৫২টি পুরসভা নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত বলে ঘোষণা করতে পারেনি।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৬
Share:

ছবি: এপি।

গাঁধীর দেড়শো-তম জন্মবার্ষিকীতে বুধবার নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশকে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করবেন। কিন্তু তাতে একমাত্র খুঁত থেকে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। কেন্দ্রীয় সরকারের আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের হিসেবে, রাজ্যের ৫২টি পুরসভা ও পৌর নিগম এখনও নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত বলে ঘোষণা করতে পারেনি।

Advertisement

স্বচ্ছ ভারত মিশন (শহর)-এর ডিরেক্টর বিনোদ কুমার জিন্দল বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই কোথাও কোনও অসুবিধা রয়েছে যে কারণে এই ৫২টি পুরসভা নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত বলে ঘোষণা করতে পারেনি। তবে আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলছি।’’ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাকি সব রাজ্যের শতকরা ১০০ ভাগ পুরসভাই নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। জিন্দলের বক্তব্য, এমনটাও হতে পারে ওই পুরসভাগুলির মধ্যে কিছু এলাকা প্রকাশ্য শৌচমুক্ত হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রকে জানানো হয়নি।

ঘোষণা হলেও বাস্তব কী, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছে। খাতায় কলমে, ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলই গ্রামীণ এলাকায় প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাড়িতে শৌচালয় না থাকায় প্রকাশ্যে শৌচ করায় গত সপ্তাহেই মধ্যপ্রদেশের শিবপুরীতে দুই দলিত বালককে পিটিয়ে খুন করেছে উচ্চবর্ণের লোকেরা। একই ভাবে শহর এলাকাতেও পশ্চিমবঙ্গের ৫২টি বাদে দেশের সমস্ত পুরসভা নিজেদের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত বলে ঘোষণা করলেও প্রকাশ্যে শৌচ বন্ধ হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসে নরেন্দ্র মোদী ২০১৪-য় লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, ২০১৯-এ গাঁধীর দেড়শো-তম জন্মবার্ষিকীতে গোটা দেশকে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত করবেন। স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ)-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত পানীয় জল ও নিকাশি দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের সমস্ত গ্রামীণ এলাকা এখন প্রকাশ্য শৌচমুক্ত। শহুরে এলাকায় পশ্চিমবঙ্গের ৫২টি পুরসভা বা পৌর নিগম বাদে বাকি সব পুরসভাই নিজের প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করে দিয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে খুঁত থেকে যাওয়া সত্ত্বেও মোদী বুধবার, ২ অক্টোবর নিজের লক্ষ্য মেনে গোটা দেশকে প্রকাশ্য শৌচমুক্ত ঘোষণা করবেন।

স্বচ্ছ ভারত মিশন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের ঠোকাঠুকি নতুন নয়। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের স্বচ্ছ ভারত মিশনের তুলনায় রাজ্যের ‘নির্মল বাংলা’ অভিযানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে কোন রাজ্য কেমন কাজ করেছে, তার সমীক্ষার জন্য ২০১৬-য় পশ্চিমবঙ্গ যোগ দিলেও ২০১৭-য় দেয়নি। আবার ২০১৮-য় যোগ দিয়েছিল। সেই বছরের সমীক্ষায় রাজ্যের ২৯টির মধ্যে ২৫টি শহর দেশের ৫০টি নোংরাতম শহরের মধ্যে ছিল। এর পরে ২০১৯-র সর্বেক্ষণে পশ্চিমবঙ্গ যোগ দেয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement