নেপাল সীমান্ত নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটপ্রচারে গিয়ে নেপাল সীমান্ত নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রচারে তাঁর প্রতিশ্রুতি, লিপুলেখ পাস পর্যন্ত ভারত যে রাস্তা তৈরি করেছে, তা আরও বাড়ানো হবে। এতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আর এই প্রতিশ্রুতিতেই নেপালের সঙ্গে ভারতের পুরনো সংঘাত ফের মাথাচাড়া দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে নেপালের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জ্ঞানেন্দ্র বাহাদুর কারকি জানিয়েছেন, যে জায়গায় মোদী রাস্তা তৈরির কথা বলছেন, তা নেপালের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনও ভাবেই সেখানে ভারতকে রাস্তা তৈরি করতে দেওয়া হবে না। নেপাল কংগ্রেসের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, লিপুলেখ, কালাপানি, লিম্পিয়াধুরা ইত্যাদি এলাকাগুলি নেপালেরই অংশ। এই এলাকায় একমাত্র নেপালেরই অধিকার আছে কোনও কিছু করার। কালাপানিতে ভারতের যে সব সেনা রয়েছেন, সেই সব সেনা যেন দ্রুত ওই সব এলাকা থেকে ফিরে যান।
অবশ্য এই বিতর্ক একেবারই নতুন নয়। নেপালের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সময়েই ভারত ও নেপালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সঙ্কটের পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ওলির নেতৃত্বে নেপাল পার্লামেন্টে নতুন মানচিত্র পাশ হয়। এই মানচিত্রে সীমান্তের বেশ কিছু বিতর্কিত অংশ নেপালের অন্তর্গত বলে দাবি করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, লিপুলেখ পাস অঞ্চলে কালাপানি পূর্ব পর্যন্ত নেপালের অংশ। দাবি করা হয়, লিপুলেখ পাসও নেপালেরই।
ভারত এর মধ্যেই সেখানে রাস্তা তৈরি করেছে। সেই রাস্তারই সম্প্রসারণের কথা বলেছেন মোদী, যার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নেপাল। গোটা বিষয়টির সূত্রপাত, ২০২০ সালের মে মাসে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ উত্তরাখণ্ডের ধারচুলা থেকে চিন সীমান্ত ঘেঁষা লিপুলেখ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন। এই রাস্তা চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক পথ হিসাবেও ব্যবহৃত হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। ঘটনা হল লিপুলেখ এমন একটি গিরিপথ, যেখানে উত্তরাখণ্ড, তিব্বত ও নেপালের সীমান্ত এসে মিশেছে। ভারতের দাবি, এই রাস্তাটি কৈলাস-মানস সরোবরের প্রাচীন তীর্থপথকেই অনুসরণ করেছে। নেপালের দাবি, লিপুলেখ তাদেরই ভূখণ্ড এবং রাস্তাটি কমপক্ষে ১৭ কিলোমিটার নেপালের ভূখণ্ড দিয়ে গেছে। সেখানে রাস্তা তৈরি করে ভারত ঠিক কাজ করেনি।