নরেন্দ্র মোদী।
‘আপনজনের’ সঙ্গে সময় কাটাতে চান বলেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রত্যেক দীপাবলি সীমান্তে সেনার জওয়ানদের সঙ্গেই কাটে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শনিবার রাজস্থানের জয়সেলমেরে লঙ্গেওয়ালা পোস্টে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীপাবলির শুভেচ্ছা ভাগ করে নেওয়ার ফাঁকে মোদী বলেন, “(প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে) প্রথম বার (দীপাবলিতে) সিয়াচেনে গিয়েছিলাম। অনেকে আশ্চর্য হয়েছিলেন।…কিন্তু দীপাবলিতে নিজের লোকের কাছেই তো যাব। সেই কারণে আপনজনের কাছেই তো এসেছি।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, দীপাবলিতে তিনি একা আসেননি। এসেছেন ১৩০ কোটি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে। সীমান্তে সজাগ সেনার অতন্দ্র প্রহরা আছে বলেই যাঁরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যেতে পারেন। নিশ্চিন্তে শামিল হতে পারেন উৎসবে। তাঁর কথায়, “উৎসবে সারা দেশের পক্ষ থেকে মিষ্টি এনেছি। এতে দেশের সব মায়ের হাতের মিঠে ছোঁয়া পাবেন। পাবেন বাবা-মা-ভাই-বোনের স্পর্শ।…সারা দেশের ভালবাসা, স্নেহ, আশীর্বাদ আপনাদের সঙ্গে।”
এ দিন সেনার জলপাই উর্দি ও টুপি পরে এবং কালো রোদ-চশমা চোখে অন্য মেজাজে দিন কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কখনও জওয়ানদের হাতে তুলে দিয়েছেন মিষ্টির প্যাকেট, তো কখনও রাজস্থানি কবির কবিতা শুনিয়েছেন তাঁদের। বার বার যেমন সেনা জওয়ান ও তাঁদের পরিবারের আত্মত্যাগের কথা বলেছেন, তেমনই তাঁকে সওয়ার হতে দেখা গিয়েছে যুদ্ধের ট্যাঙ্কে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, যে লঙ্গেওয়ালা পোস্টে তাঁর দীপাবলি কাটছে, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে সেখানে লেখা হয়ে থাকা শৌর্যগাথা মুগ্ধ করবে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। কিন্তু এই মরু প্রান্তরে গরমে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতে শূন্যের নীচে। একই রকম কষ্টে দিন কাটে সেই সেনাদেরও, যাঁদের বছরভর পাহারা দিতে হয় সিয়াচেন-সহ দেশের সীমান্ত। মোদীর দাবি, সেনার এই আত্মত্যাগের কথা মাথায় রেখেই জওয়ানদের জন্য যথাসাধ্য করার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। আশ্বাস দিয়েছেন, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে আত্মনির্ভর করার চেষ্টা চলছে। শহিদ সেনাদের পরিবারের, বিশেষত তাঁদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছে সরকার।
আরও পড়ুন: ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল সেনায় যাওয়ার
কিন্তু বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, মোদী জমানায় সেনা, আধা-সেনার উপরে হামলার ঘটনা বেড়েছে বহু গুণ। পুলওয়ামা যার জলজ্যান্ত প্রমাণ। তাঁদের জিজ্ঞাসা, আগেভাগে গোয়েন্দা সূত্রকে আরও অনেক বেশি পোক্ত করে বহু সেনার প্রাণ বাঁচানো যায় না? এড়ানো সম্ভব নয় পুলওয়ামার মতো ঘটনা? জওয়ানদের কাছে এ দিন তিনটি জিনিস চেয়েছেন মোদী। বলেছেন, “নতুন কিছু করা, নতুন ভাবে করা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাকে অভ্যেস বানিয়ে ফেলুন। জীবনের অঙ্গ করে তুলুন যোগাভ্যাসকে। মাতৃভাষা, হিন্দি, ইংরেজির বাইরেও শিখে ফেলুন আরও অন্তত একটি ভারতীয় ভাষা।”