ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গত বছর বাদল অধিবেশনের সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। তাতে পওয়ার যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসও যোগ দিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস সেই বৈঠকে যোগ দেয়নি। কংগ্রেসের সঙ্গে বাম, আরজেডি, অকালি দলের নেতারাও বৈঠকে যাননি। তাঁদের বক্তব্য ছিল, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে যা বলার, সরকার সংসদেই বলুক। আজ সেই প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘‘আমি শরদ রাওজিকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। উনি বলেছিলেন, এটা ইউপিএ-র সিদ্ধান্ত নয়। (তবে) উনি নিজে যতগুলি দলের সঙ্গে সম্ভব কথা বলবেন। তৃণমূল ও অন্য দলও বৈঠকে এসেছিল।’’ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর রীতি মেনে কাজ করার দাবিতে মোদী বলেন, কোভিডের মোকাবিলায় তিনি ২৩ বার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যা কোনও প্রধানমন্ত্রীর আমলে হয়নি।
কোভিডের মোকাবিলায় পওয়ার নিজের এলাকায় মানুষকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও মোদী মন্তব্য করেন। উল্টো দিকে কংগ্রেসকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেস এখন যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে উপদেশ দিচ্ছে। নিজেরা যখন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ছিল, তখন কত জন মুখ্যমন্ত্রীকে ছোটখাটো বিষয়ের জন্য বরখাস্ত করেছে। নিজের দলের মুখ্যমন্ত্রীরাও রেহাই পাননি।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, মোদী আসলে জানেন, উত্তরপ্রদেশে এসপি ভাল ফল করলে, দেশ জুড়ে বিজেপিবিরোধী আবহ তৈরি হবে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপিকে হারানোর পরে হয়েছিল। রাজ্যে বিজেপিবিরোধী হাওয়ার লাভ আঞ্চলিক দলগুলি পেতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রে, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসও তার ফায়দা তুলবে। স্বাভাবিক নিয়মেই কংগ্রেসকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক দলগুলির জোটের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
মোদীর এই কৌশলে কতখানি লাভ হয়েছে, তা বলা মুশকিল। কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার সময়ে ওয়াক-আউট করলে, শরিক দলগুলিও সঙ্গ নিয়েছে। এমনকি তৃণমূলও। রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ জহর সরকার প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘মনমোহন সিংহ, এইচ ডি দেবগৌড়াকে দেখে বোঝা যায়, প্রধানমন্ত্রী পদের গাম্ভীর্য কাকে বলে। সবাইকেই (কিন্তু) এক দিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হতে হবে।’’
সোমবার লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কোভিডে মুম্বইয়ে কংগ্রেস পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রামে ফিরতে চাপ দিয়েছে। ফলে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাবে করোনা বেড়ে যায়। পওয়ার কন্যা সুপ্রিয়া সুলে তার জবাবে বলেছেন, গুজরাত থেকে ট্রেন ভর্তি শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো হয়েছিল। আজ কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা মোদীর অভিযোগের জবাবে বলেন, ‘‘উনি যাঁদের হাত ছেড়ে দিয়েছিলেন, যাঁদের গ্রামের বাড়ি ফেরা ছাড়া উপায় ছিল না, যাঁরা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলেন, উনি কি চাননি, কেউ তাঁদের সাহায্য করুক? মোদীজি কি চান? কোভিডের মধ্যেও উনি যে সভা করেছিলেন, তার ফলে কী হয়েছিল?’’