প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের শেষ প্রচারে উন্নয়নের কথা কম বরং কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণেই জোর দিলেন নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, অগ্নিবীর যোজনা থেকে কৃষক আন্দোলন, কুস্তিগিরদের ক্ষোভ থেকে বেকারত্বের মতো বিভিন্ন বিষয় এ বার বিজেপির জমি নড়বড়ে করে দিয়েছে। আর সে কারণেই মোদীকে বাড়তি আক্রমণাত্মক হিসাবে দেখা গেল কিনা, সেই প্রশ্ন উঠছে। গত লোকসভা ভোটের আগে যে ভাবে দলিত তাস খেলে কংগ্রেসকে সংবিধান বিরোধী, সংরক্ষণ বিরোধী হিসেবে দাগিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দলের তকমা দিয়েছিলেন, এ বারেও একই পথে হাঁটলেন। সেই সঙ্গে বিজেপিকে বিশুদ্ধ জাতীয়তাবাদ এবং দেশপ্রমের ধারক হিসেবে তুলে কংগ্রেসকে পাকিস্তানের সমর্থক এবং দালাল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
মোদীর কথায়, “আজকের কংগ্রেস শহুরে নকশালদের প্রতিনিধিত্ব করে। যারা বিশ্বের মাটিতে ভারতের বদনাম করে, কংগ্রেসের নেতারা তাদের আলিঙ্গন করেন। দেশের শত্রুদের তারিফ করেন। তারা কাশ্মীরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ ফেরানোর কথা বলেন কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে আনা নিয়ে একটি বাক্যও মুখ থেকে তাদের বেরোয় না।” কংগ্রেসকে বেইমান বলেও নিশানা করেছেন মোদী। তুলেছেন দুর্নীতি প্রসঙ্গও। মোদীর কথায়, “এই দলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। কংগ্রেসের শাসনকালে জমির দালালি করে অনেকই ধনী হয়েছেন, দামাদজি (জামাই) লাভবান হয়েছেন।” ‘দামাদ’ বলতে সনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট বঢরার কথাই মোদী বুঝিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মেরুকরণের রাস্তায় হেঁটে মোদী বলেন, “কংগ্রেসের একটাই লক্ষ্য, ভোটের জন্য তোষণের রাজনীতি।” একই সঙ্গে মোদীর আক্রমণ, “ধর্মের ভিত্তিতে ওরা ভোটব্যাঙ্ক ভাগ করে। তার জেরে দলিত এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের সন্তানকে ওই প্রতিষ্ঠানগুলিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ কমে গিয়েছে, চাকরির ক্ষেত্রেও সংরক্ষণ থাকেনি। এটা হরিয়ানাতেও করতে চায়। কংগ্রেস দেশের সবচেয়ে বড় দলিত বিরোধী দল।”
পঞ্জাব-পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি কৃষক আন্দোলনে হরিয়ানার কৃষকদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কৃষিপণ্যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) দাবিতে এই আন্দোলন এখনও চলছে পঞ্জাব, হরিয়ানা সীমানায়। সেই অভিযোগের তির ঘুরিয়ে মোদী বলেন, “যখন কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল তারা তিন থেকে চারটি ফসল এমএসপি-তে কিনত। বিজেপি ২৪টি ফসল কিনেছে এমএসপি-তে। গত আটটি মরসুমে আমরা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে মোট ১লক্ষ ১০হাজার কোটি টাকা দিয়েছি।”
‘এক পদ এক পেনশন যোজনা’ চালু না করে কংগ্রেস সেনাকে ঠকিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন মোদী। তাঁর অভিযোগ, “৭০ বছরের শাসনকালে কংগ্রেস দেশের এক বিরাট জনসংখ্যাকে রাস্তা, বিদ্যুৎ ও জল থেকে বঞ্চিত রেখেছে। দিল্লি থেকে ১ টাকা উন্নয়নের জন্য দেওয়া হলে মানুষের কাছে পৌঁছত ১৫ পয়সা।”