ভোটের আগে ঘর গোছাতে গুজরাতে মোদী

সম্মানের লড়াইয়ের আগে নিজের মাটিতে পৌঁছে রাজ্যপাট গুছিয়ে নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। বছরের শেষেই ভোট গুজরাতে। যত দিন যাচ্ছে, হার্দিক পটেল আর কংগ্রেস নেতারা সক্রিয় হচ্ছেন।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০৩:০৮
Share:

বক্তা: নর্মদা জলপ্রকল্পের আওতায় একটি পাম্পিং স্টেশনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার গুজরাতের কচ্ছে। ছবি: পিটিআই।

সম্মানের লড়াইয়ের আগে নিজের মাটিতে পৌঁছে রাজ্যপাট গুছিয়ে নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

বছরের শেষেই ভোট গুজরাতে। যত দিন যাচ্ছে, হার্দিক পটেল আর কংগ্রেস নেতারা সক্রিয় হচ্ছেন। মোদীও জানেন, এ বারের লড়াইয়ে তিনিই এখানে বাঁচার একমাত্র মন্ত্র। তাই নিজের রাজ্যে আজ ফের ঘর গোছাতে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন কচ্ছের কাণ্ডলা বন্দর এলাকায় বেশ কিছু প্রকল্পর উদ্বোধন করেন তিনি। গাঁধীধামে জনসভা করে মোদী বোঝান, ২০০১ সালের ২৬ জানুয়ারি ভূমিকম্পে চরম ধ্বংসের মধ্য থেকে গোটা ভুজ এলাকাকে নতুন জীবন দিয়েছিলেন তিনিই। আর এখনও গুজরাতকে উন্নয়নের শীর্ষে রাখবেন।

গাঁধীনগর ছেড়ে মোদী যে দিন দিল্লির রেসকোর্স রোডে পৌঁছন, সে দিন থেকেই এ রাজ্যে বিজেপির চরম কোন্দল শুরু। বিজেপির দীর্ঘ শাসনের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই পটেল। তাঁর জমানাতেই পটেল সম্প্রদায়ের সমর্থনে ভাঙন ধরছিল। মাথাচাড়া দিয়েছিল দুর্নীতি। এই অবস্থায় মোদী হাল ধরেন। হ্যাটট্রিক, ক্ষমতায় পর পর তিন বার তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন ‘গুজরাত মডেল’। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-কে বড় ক্যানভাসে নিয়ে গিয়ে বিশ্বকে গাঁধীনগরে হাজির করিয়েছেন। আবার দলের নীচুতলার দিকেও তাঁর কড়া নজর ছিল। কিন্তু মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে, মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায়। তাঁর জামাইয়ের বিরুদ্ধে প্রচার চলতে থাকে দলের ভিতর। এরই মধ্যে হার্দিক পটেলের আন্দোলনের ঝড়। পরিস্থিতি সামলাতে বিজয় রূপাণিকে মুখ্যমন্ত্রী করা হল। পটেল সম্প্রদায়কে ঠাণ্ডা করতে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হলেন নিতিন পটেল। কিন্তু এর পরেও দেখা যাচ্ছে, মোদীর অনুপস্থিতিতে বিজেপিতে ঝগড়া বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে হার্দিক ও তাঁর ৫০ জন অনুগামী ন্যাড়া হয়ে প্রতিজ্ঞা করেছেন, ভাবনগর থেকে ৫০টি গ্রামে ন্যায়যাত্রা করবেন তাঁরা। দাবি, পটেলদের ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় আনা হোক। মোদী যখন গুজরাতে, ১৫৫ কিলোমিটারের সেই পদযাত্রা তখনই শুরু হচ্ছে। গুজরাতে ১৯ বছর ধরে বিজেপির শাসন। মোদী জানেন, এর পরেও যদি প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার ধাক্কা না আসে, তো কবে হবে!

Advertisement

ঘরে বাইরে এখন সেই লড়াইয়ের মুখোমুখি মোদী। গুজরাত সফরে বারবার উন্নয়নের কথা তুলে ধরছেন। গাঁধীনগর-আমদাবাদে পৌঁছে বার্তা দিচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েও গুজরাতের উন্নয়ন তাঁর অগ্রাধিকার। আর অমিত শাহ বলছেন, ‘‘মোদী গুজরাতে নেই, এ কথা কে বলল? দিল্লিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু গুজরাতে রয়েছেন প্রতি মূহূর্তে। আর মোদী জানেন, তাঁর নিজের রাজ্য হাতছাড়া হলে লোকসভা ভোটের আগে তা বিরোধীদের কাছে বড় অস্ত্র হয়ে যাবে। সেই ঝড় যাতে না উঠতে পারে, সে জন্যই নিজের জমিতে পৌঁছচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement