রাহুল গাঁধীকে আক্রমণের জবাব নরেন্দ্র মোদীর। ছবি: টুইটার
‘লাঠিপেটা’ মন্তব্যের পাল্টা হিসাবে রাহুল গাঁধীকে আক্রমণের জন্য তিরটা আগেই বাছাই করে রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির জবাবি ভাষণ দেওয়ার সুযোগটা পুরোদমে কাজে লাগালেন নরেন্দ্র মোদী। রসিকতা আর তীব্র কটাক্ষের মিশেলে রাহুলকে একের পর এক তীক্ষ্ম অস্ত্রে বিঁধলেন মোদী। তাঁর নিশানা থেকে বাদ গেল না কংগ্রেসও।
এ দিন জবাবি ভাষণের প্রথম থেকেই তাঁর সরকারের একের পর এক ‘সাহসী’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা তুলে ধরে কংগ্রেসকে বিঁধছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ, রামমন্দির বিতর্কের সমাধানের কথা তুলে ধরে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন তাঁর সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও। আগের আমলের তুলনাও করছিলেন। এর পরই তিনি নিশানা করেন রাহুল গাঁধীকে। তাঁর নাম না করেই বলেন, ‘‘আমি গত কাল কংগ্রেসের এক নেতার ইশতাহারের কথা শুনছিলাম। তিনি বলেছেন ছ’মাসের মধ্যেই মোদীকে ডান্ডা মারা হবে। এই কাজটা সত্যি কঠিন।’’
মোদী এটুকু বলার পরেই সরকার পক্ষের সাংসদদের মধ্যে হাসির রোল ওঠে। শুরু হয় ‘‘শেম শেম’’ ধ্বনিও। একটু চুপ থেকে ফের মোদী বলতে শুরু করেন, ‘‘ডান্ডা মারার কাজটা কঠিন বলেই ছ’মাস সময় লাগবে। তা ভাল। কিন্তু আমিও মনে করেছি এই ছ’মাসে সূর্য নমস্কারের সংখ্যা আরও বাড়াব।’’ এর পর রসিকতার মেজাজটা ধরে রেখেই আবেগতাড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত ২০ বছর ধরে গালিগালাজ শুনে নিজেকে গালি প্রুফ তৈরি করেছি। আর এই ছ’মাসে এমন সূর্য নমস্কার করব যে নিজের পিঠ ডান্ডা-প্রুফ করে নেব।’’ আরও খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যে আমাকে ডান্ডা মারার কথা আগেই ঘোষণা করা হয়েছে। আমিও এই ছ’মাস ব্যায়াম করার জন্য সময় পাব।’’
আরও পড়ুন: ‘শাহিন বাগে আত্মঘাতী বোমারু তৈরি করা হচ্ছে’, বিতর্কিত মন্তব্য গিরিরাজের
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার মাঝেই তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলতে যান রাহুল গাঁধী। ফের সরস ভঙ্গিতে মোদী বলেন, ‘‘আমি ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ধরে বলছি। কিন্তু কারেন্ট পৌঁছতে এত দেরি লাগল।’’ এর পর কিছুক্ষণ থেমে রাহুলকে শেষ অস্ত্র প্রয়োগ করেন তিনি। বলেন, ‘‘কিছু টিউবলাইট আছে যার জ্বলতে এতটাই সময় লাগে।’’
বুধবার মোদীকে নিশানা করেছিলেন রাহুল। দিল্লিতে একটি জনসভায় দেশে বেকারত্বের প্রসঙ্গ টেনে রাহুল বলেন, ‘‘মোদী অনেক ভাষণ দিচ্ছেন। আমি বলছি, ছয় কিংবা সাত-আট মাস কেটে যাক, মোদী ঘর থেকে বেরোতে পারবেন না। দেশের যুবকেরা তাঁকে এমন ভাবে লাঠিপেটা করবেন যে উনি সবকিছু বুঝে যাবেন। বুঝবেন, রোজগারের ব্যবস্থা করা ছাড়া দেশ এগোতে পারে না।’’
আরও পড়ুন: স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ৩০ কোটি, অজ্ঞান হওয়ার জোগাড় সাধারণ ফুল ব্যবসায়ীর!
এ দিন রাহুলকে যেমন তীব্র কটাক্ষে বিঁধেছেন তেমনই লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে নিয়েও রসিকতা করেন মোদী। বলেন, ‘‘যখন অধীররঞ্জন চৌধুরী বক্তৃতা করেন তখন আমি কিরেণ রিজিজুকে ধন্যবাদ জানাই। অধীরজি রিজিজুজির ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টকে খুব ভাল ভাবে তুলে ধরেন। তিনি বক্তৃতা করার সময়েই ব্যায়াম করেন।’’