ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরে বিজেপিতে চালু করা হয় পঁচাত্তর বছর বয়স হলে রাজনৈতিক বাণপ্রস্থে যাওয়ার রেওয়াজ। যার পোশাকি নাম মার্গদর্শক মণ্ডলী। সেখানে ঠেলে দেওয়া হয় লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলী মনোহর জোশীর মতো প্রবীণ নেতাদের।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের সময়ে মোদীর বয়স হবে চুয়াত্তর। কিন্তু চব্বিশের লোকসভা ভোটে জিতে এলে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতে চান, এমন ইঙ্গিত বৃহস্পতিবার দিয়েছেন মোদী নিজেই। বলেছেন, ‘‘সম্প্রতি একটি বিরোধী দলের এক জন বড় নেতার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। উনি বললেন, মোদীজি, এই দেশের মানুষ আপনাকে দু’বার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছে। আর কী চান?’’ এর পরেই মোদী বলেন, ‘‘ওঁর মতে, কেউ দু’বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেই তো সব কিছু পাওয়া হয়ে গেল। কিন্তু মোদী অন্য ধাতু দিয়ে তৈরি। এখন আমার বিশ্রাম নেওয়ার সময় নয়। আমার স্বপ্ন, উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিকে ১০০ শতাংশ সফল করে তোলা।’’ সেই ‘বড়’ বিরোধী নেতার নাম তিনি প্রকাশ্যে আনেননি। তবে অনেকেরই ধারণা তিনি এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার।
তবে কে মোদীকে এই কথা বলেছিলেন, তার থেকেও বড় জল্পনার বিষয়, তাঁর ভবিষ্যতে বিশ্রাম নিতে না-চাওয়ার বার্তা।
মোদীর ঘনিষ্ঠ শিবির চায়, পরের ভোটে জিতলে তিনিই ফের প্রধানমন্ত্রী থাকুন। আবার দলের ছোট অংশ মনে করে, রাষ্ট্রপতির মতো পদে যাওয়া উচিত মোদীর। তবে সূত্রের মতে, আলঙ্কারিক কোনও পদ মোদী চাইবেন না। বরং চাইবেন তিন দফার প্রধানমন্ত্রিত্ব সম্পূর্ণ করে নেহরুর সঙ্গে একাসনে বসতে।
এ দিকে, চব্বিশের ভোটের পরে মোদীর বদলে অমিত শাহ প্রধানমন্ত্রী হবেন কি না, এমন জল্পনা সম্প্রতি উস্কে দিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তিনি বলে বসেন, “প্রধানমন্ত্রী অমিত শাহ, আমার শ্রদ্ধেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং দলের রাষ্ট্রীয় সভাপতি জে পি নড্ডাকে অভিনন্দন জানাই।” হিমন্তবিশ্বের তরফে যদিও দাবি করা হয়, মুখ ফস্কেই ওই কথা বলেছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের মতে, সুকৌশলে শাহের নামই মোদীর উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিজেপি সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশের ভোট হওয়ার আগে অনেকটা জোর দিয়ে বলা যেত, অমিতই মোদীর উত্তরসূরি। কিন্তু দ্বিতীয় বার মসনদ দখল করে সেই সমীকরণ পাল্টে দেন যোগী আদিত্যনাথ। মোদী যদি প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে তিন দফা সম্পূর্ণ করেন, উত্তরপ্রদেশে আরও একটি ভোট হয়ে যাবে। ফের জিতলে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে শাহকে পিছনে ফেলে দিতে পারেন সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ যোগী।