রাফালের চাকার সামনে লেবু। —ফাইল চিত্র।
ফ্রান্সে রাফাল হস্তান্তরের পর নারকেল ফাটিয়ে, যুদ্ধবিমানের চাকার নীচে লেবু রেখে ‘শস্ত্র পূজা’ করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। যা নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনা করলেও তাকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, ‘‘এটা আমাদের বিশ্বাস। প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও এ কাজ করব।’’
রাজনাথের এই মন্তব্যের পরে অনেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, দু’বছর আগে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার কিছু অংশকে। সেখানে এক মুখ্যমন্ত্রীর নাম না-করে মোদী বলেছিলেন, ‘‘এক মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি কিনেছেন। তার পরে গাড়ির উপর লেবু-লঙ্কা আরও কত কিছু রেখেছিলেন... এ রকম অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে যাঁরা বাঁচেন, তাঁরা সমাজের মঙ্গল করতে পারেন না।’’
রাজনাথের ‘শস্ত্র-পুজো’র সমালোচনা করে কংগ্রেস নেতা উদিত রাজ বলেছিলেন, ‘‘যে দিন এমন কুসংস্কারের অবসান হবে, সে দিন ভারত নিজে যুদ্ধবিমান তৈরি করা শুরু করবে।’’ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেছিলেন, ‘তামাশা’। ফ্রান্স থেকে গত কাল রাতে দেশে ফেরার পর রাজনাথ অবশ্য এ সব সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, ‘‘যেটা ঠিক মনে হয়েছে, সেটাই করেছি। ভবিষ্যতেও যা ঠিক মনে হবে, তা-ই করব। এটা আমাদের বিশ্বাস, এর মধ্যে একটা বিশেষ শক্তি (সুপার পাওয়ার) রয়েছে।’’ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, ‘‘শস্ত্র পূজা ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ।’’ রাজনাথ জানান, আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে সাতটি রাফাল পাবে ভারত।
মোদী মন্ত্রিসভার সদস্যেরা ‘বিশ্বাস’, ‘সংস্কৃতি’র কথা বলে ‘শস্ত্র পূজা’র যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা করছেন। অথচ ২০১৭ সালে ওই সভায় মোদী বলেছিলেন, ‘‘শুধু বিশ্বাসে আটকে থাকলে, সমাজ এগোতে পারে না। প্রযুক্তির যুগে বাস করছি। এখানে বিশ্বাসের জায়গা আছে, কিন্তু অন্ধবিশ্বাসের জায়গা নেই।’’ রাজনাথের ‘শস্ত্র পূজা’কে অবশ্য সমর্থন করেছেন পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর আসিফ গফুর।