এ দিকে আজ উখরুলের মিশন গ্রাউন্ড ও টেংনাওপালের মোরেতে জনসভা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। তাঁর কথায়, “মণিপুরকে বাদ দিয়ে আত্মনির্ভর ভারতের কথা, ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশের কথা কল্পনাই করা যায় না। আমরা উত্তর-পূর্বের সঙ্গে কখনও বৈষম্য করিনি।”
ফাইল চিত্র।
বিজেপি সব রাজ্যের সম উন্নয়ন ও সমানাধিকারে বিশ্বাসী নয় বলে দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা রাহল গান্ধী। সোমবার মণিপুরে প্রচারে গিয়ে হাপতা কাংজেইবুঙের জনসভায় এই দাবি করেন তিনি। এ দিনই বিজেপির প্রচারে নিতিন গডকড়ী বৈষম্যের অভিযোগ খারিজ করে দেন।
সম্প্রতি অখণ্ড ভারতের কথা বোঝাতে গিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উল্লেখ বাদ পড়েছিল রাহুলের টুইটে। এ নিয়ে বিজেপির আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে রাহুলকে। আজ তিনি সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে লোকসভার ভাষণে তাঁর দেওয়া ভারতবর্ষের সংজ্ঞা নিয়ে বিজেপির আপত্তির পাল্টা সমালোচনা করেন। লোকসভায় তিনি বলেছিলেন, ভারত হল রাজ্যগুলির সমষ্টি। এ নিয়ে বিজেপি ও আরএসএসের আপত্তির প্রসঙ্গ তুলে রাহুল বলেন, “কংগ্রেস বরাবর দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিবিধ সংস্কৃতিকে সুরক্ষিত রাখতে কাজ করেছে। কিন্তু বিজেপির কাছে দেশের সংজ্ঞা ভিন্ন। তারা মোটেই সব রাজ্যের সমানাধিকার, সম উন্নয়নে বিশ্বাসী নয়। তাদের মতে, তাদের ধর্ম, তাদের ভাষাই শ্রেষ্ঠ। সকলকে তার সামনে বশ্যতা স্বীকার করতে হবে। ভারতে এখন এমনই যুদ্ধ চলছে।”
রাহুলের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী, বিজেপি ও আরএসএস নেতারা এখানকার মানুষকে ভালবেসে নন, নিজেদের আধিপত্য ও শ্রেষ্ঠতা তুলে ধরতে মণিপুরে আসেন। নরেন্দ্র মোদীর কথায়, আচরণে বুঝিয়ে দেন তাঁর ভাষা, দৃষ্টিভঙ্গী, সংস্কৃতিই শ্রেষ্ঠ। তাই ভারতের সংজ্ঞা কী হবে তা নির্ধারণ করার অধিকার শুধু তাঁরই আছে। জনসভায় রাহুলের দাবি, তিনি মণিপুরের মানুষকে বোঝেন, মন থেকে সম্মান করেন। তিনি এখানাকার বিভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, পরম্পরা শিখতে চান। তিনি বলেন, “কংগ্রেসে বিশ্বাস করে সব রাজ্যের নিজের ভাষা, সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করার সমান অধিকার রয়েছে।”
তাঁর কথায়, “মোদী এখন আর ২ কোটি চাকরি, ব্যাঙ্কে ১৫ লক্ষ টাকা, কৃষি আইন ও নোটবন্দির কালো অধ্যায়, ভ্রান্ত জিএসটি নীতি নিয়ে মুখ খোলেন না।” রাহুলের দাবি, “কেন্দ্র ১১ হাজার কোটি টাকা পাম তেল চাষের যে উদ্যোগ চাপিয়ে দিতে চাইছে, তাতে মণিপুরের কোনও লাভ হবে না, উল্টে ধ্বংস হবে মণিপুরের অর্থনীতি। শুধু পতঞ্জলির মতো কিছু সংস্থার লাভ হবে। মণিপুরবাসীর ক্ষতি করে বাবা রামদেবের মঙ্গল করতে দেওয়া চলবে না।”
কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলে রাহুল বলেন, “মোদী বিশ্বের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি থালা বাজিয়ে, মোবাইল জ্বালিয়ে করোনা তাড়ানোর অভিযান চালিয়েছেন।” রাহুল আজ বীর টিকেন্দ্রজিৎ উদ্যানে শহিদ স্তম্ভে ও নুপি লাল স্মারকে শ্রদ্ধা জানান। প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন।
এ দিকে আজ উখরুলের মিশন গ্রাউন্ড ও টেংনাওপালের মোরেতে জনসভা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। তাঁর কথায়, “মণিপুরকে বাদ দিয়ে আত্মনির্ভর ভারতের কথা, ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশের কথা কল্পনাই করা যায় না। আমরা উত্তর-পূর্বের সঙ্গে কখনও বৈষম্য করিনি।” তিনি রাজ্যের বিভিন্ন সড়ক প্রকল্প ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, “এ বারের ভোট মণিপুর রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে।”