(বাঁ দিকে) নরসিংহ রাও। মনমোহন সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দেশে অর্থনীতির বৃদ্ধি কী ভাবে ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে, ক্ষমতায় এসেই তা মাপার ফিতে বদলে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। যুক্তি হিসাবে নানা ‘তথ্য-পরিসংখ্যান’ দিয়ে দুষেছিলেন পূর্বতন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে। কিন্তু এ বার মোদী সরকারই স্বীকার করে নিল, কংগ্রেসের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত নরসিংহ রাও এবং মনমোহন সিংহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের মাধ্যমে লাইসেন্স রাজের অবসান ঘটিয়ে সংস্কার কর্মসূচির মাধ্যমে ভারতের অর্থনীতিতে নবজোয়ার এনেছিলেন!
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে নয় বিচারপতির বেঞ্চে বুধবার ভারতে আর্থিক উদারীকরণ এবং এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে কেন্দ্রের আইনজীবী, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী রাও এবং তাঁর সরকারের অর্থমন্ত্রী মনমোহন যে আর্থিক সংস্কার নীতি চালু করেছিলেন তার ফলে কোম্পানি আইন এবং ‘মোনোপলিজ অ্যাণ্ড রেস্ট্রিক্টিভ ট্রেড প্র্যাকটিস অ্যাক্ট’ (এমআরটিপি)-সহ অসংখ্য আইন সংস্কার করা হয়েছিল। তাঁদের ওই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলেই পরের তিন দশক ধরে পরবর্তী সরকারগুলি ১৯৫১ সালে শিল্প (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করার প্রয়োজন দেখেনি।’’
১৯৫১ সালে শিল্প (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) আইনকে ‘লাইসেন্স রাজ যুগের বিভেদকামী’ আইন বলেও বুধবার শুনানিপর্বে চিহ্নিত করেন সলিসিটর জেনারেল মেহতা। তবে নরসিংহ-মনমোহনের আর্থিক সংস্কার নীতির ফলে ওই আইন কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে বলে শীর্ষ আদালতে দাবি করেন তিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে ‘বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসেবে ইউপিএ সরকার এবং কংগ্রেসকে নীতিপঙ্গুত্ব নিয়ে নাগাড়ে আক্রমণ করতেন মোদী। দাবি করতেন, বৃদ্ধির হার থমকে গিয়েছে সেই কারণেই। ক্ষমতায় এসেই ২০১৫ সালে জিডিপি হিসেব করার পদ্ধতি বদলেছিল তাঁর সরকার। সেই সঙ্গে পাল্টে দিয়েছিল ভিত্তিবর্ষও। কিন্তু এক দশক পরে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে রাও-সিংহের অবদান স্বীকার করে নিল তাঁর সরকার।