প্রতীকী ছবি।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের প্রায় তিন কোটি পড়ুয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। ওই সিদ্ধান্ত আসলে প্রত্যেকটি পড়ুয়ার উপরে নজরদারি করার কৌশল বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব ও শিক্ষাবিদদের একাংশ।
গত সপ্তাহে একটি নির্দেশিকা জারি করেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যম। তাতে দেশের ৯০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ৪০ হাজার কলেজকে বলা হয়েছে, সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা সমস্ত পড়ুয়ার সব সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট (ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম) যেন স্কুলের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকে। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে যুক্ত করতে হবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন সচিব চিঠিতে জানিয়েছেন, কোনও পড়ুয়া বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাফল্যকে সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে তুলে ধরাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য। তা অন্যদের উৎসাহিত করতে সক্ষম হবে।
সরকারের ওই সিদ্ধান্তের আড়ালে আসলে নজরদারির গন্ধ পাচ্ছেন বিরোধীরা। বিষয়টি নিয়ে আজ সরব হয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট সরকারি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাতে অনায়াসে নজরদারি চালানো হবে। বোঝা সম্ভব হবে সেই ব্যক্তির রাজনৈতিক মতাদর্শই কী। তিনি কোন পক্ষকে সমর্থন করেন।’’ বিরোধীদের অভিযোগ, কোনও চাকরিপ্রার্থীর সরকারের সঙ্গে মতাদর্শগত বিরোধ থাকলে তাঁর সরকারি চাকরি পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। মহুয়ার মতে, ‘‘এ হল সরকারের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ। পিছন থেকে সরকারের ওই নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত ভয়াবহ।’’ বিষয়টি নিয়ে আগামী দিনে সংসদে সরব হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সরব হয়েছে দিল্লি ও জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন। উভয় সংগঠনেরই দাবি, এ হল সরকারের নজরদারি রাখার চেষ্টা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পড়ুয়ারা যাতে সরকার বিরোধিতায় না নামেন সেজন্যই ওই পদক্ষেপ।